মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থার বিবরণ দাও

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থার বিবরণ দাও
মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থার বিবরণ দাও

মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থার বিবরণ দাও

  • অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাকাশে ভারতের সামাজিক অবস্থার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
  • অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাকালে ভারতের সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল? 

উত্তর : ভূমিকা : আরবদের সিন্ধু বিজয় উপমহাদেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। কিন্তু এর পূর্বে ভারতের সামাজিক অবস্থা ছিল ত্রুটিপূর্ণ ও বিশৃঙ্খল ।

ঐতিহাসিক ওয়াল র‍্যাংক বলেন, “জাতি, ধর্ম ও ভাষার দিক দিয়ে ভারত উপমহাদেশ পৃথিবীর একটি জটিল দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল।”

এ অবস্থায় ৭১২ সালে মুহাম্মদ-বিন-কাসিম কর্তৃক সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শাসন সূচিত হয় ।

→ মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থা : মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। নিচে মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থা তুলে ধরা হলো-

১. জাতিভেদ প্রথার প্রভাব : আরবদের সিন্ধু বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দু সমাজের মিথ্যা কথা, সংকীর্ণতা, দাম্ভিকতা ও জাতিভেদ প্রথা বিস্তার লাভ করে। এ | সময় হিন্দু সমাজ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র-এ চারটি প্রধান জাতিতে বিভক্ত ছিল।

২. শোষণ ও নির্যাতন : সমাজে বৈশ্য ও শূদ্ররা ছিল অধঃপতিত। নিম্নবর্ণের লোকেরা বেদ অধ্যয়ন করলে তাদের জিহ্বা কেটে ফেলা হতো। বিভিন্ন বর্ণের লোকদের মধ্যে বিবাহ প্রচলিত ছিল ।

৩. ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়গণের সুবিধা : ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়রা অধিক সুবিধাপ্রাপ্ত উচ্চ জাতি ছিল। তাদের সুবিধার্থে অন্যান্য সম্প্রদায়কে ব্যবহার করা হতো। মনুসংহিতায় বলা হয়েছে, “পৃথিবীর যেখানে যা আছে, তা ব্রাহ্মণদের সম্পত্তি বলে পরিগণিত হবে।”

৪. নারীদের অবস্থা : নারীদের ভোগের পণ্য ছাড়া আর কিছু ভাবা হতো না। বিধবা বিবাহ নিষিদ্ধকরণ নারীদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। পুরুষেরা বহু বিবাহ করলেও নারীদের একাধিক বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল তখনকার সমাজে ।

৫. হিন্দুধর্মের প্রাধান্য : তৎকালে ভারত উপমহাদেশে প্রধানত বৌদ্ধ, জৈন ও হিন্দু ধর্মের লোক বাস করত। হিন্দু ধর্মের প্রাধান্য ছিল সবচেয়ে বেশি। অধিকাংশ রাজা ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

৬. বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা অর্চনা : মুসলিম আগমনের প্রাক্কালে হিন্দুরা বহু দেব-দেবীর পূজা করত । নিজেদের মনমতো মূর্তি তৈরি করে তারা সেগুলোর পূজা করত।

৭. কুসংস্কার : কুসংস্কার ও অনাচার সমাজ জীবনকে পঙ্গু করে রেখেছিল । আল-বেরুনি বলেন যে, নরবলি, শিশু সন্তানকে গঙ্গার জলে বিসর্জন, সতীদাহ ইত্যাদি নিষ্ঠুরতা ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলে পরিগণিত হতো ।

৮. শিক্ষা ব্যবস্থা : সে সময়ে দেশের সর্বত্র স্কুল ও কলেজ ছিল। পশ্চিম ভারতের বল্লভী ও বিহারের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশে খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, আরবদের সিন্ধু বিজয়ের প্রাক্কালে ভারত ছিল এক অন্ধকারাচ্ছন্ন উপমহাদেশ। সমাজ জীবনে জাতিভেদ, অনৈক্য, বিশৃঙ্খলা ও কুসংস্কার ভারত উপমহাদেশে মানবতার প্রগতিকে স্তিমিত করে রেখেছিল। এরূপ অন্ধকারাচ্ছন্ন সামাজিক পরিস্থিতিতে মুহাম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু বিজয় করেন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল । যদি তোমাদের আজকের মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ