মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল |
মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল
- অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাকালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থার সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধর।
- অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল?
- অথবা, মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থার ওপর একটি টাকা লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারত উপমহাদেশে রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। সে সময়ে ভারতের রাজনীতির আকাশে অস্থিরতা বিরাজ করছিল।
তখন ভারতে কোনরূপ রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। সমগ্র ভূখণ্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল এবং বিভিন্ন বংশ ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা বিরাজমান ছিল।
→ মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা : নিচে মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে সমগ্র ভারত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল এবং এ রাজ্যগুলোর মধ্যে শত্রুতা বিদ্যমান ছিল। সে সময়ের রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রধান প্রধান রাজ্যগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। যথা :
১. উত্তর ভারতীয় রাজ্যসমূহ ও
২. দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যসমূহ।
উত্তর ভারতীয় রাজ্যসমূহ :
১. আফগানিস্তান : আরবদের সিন্ধু বিজয়ের প্রাক্কালে আফগানিস্তানের হিন্দুশাহী রাজত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাধীন রাজ্য হিসেবে বিবেচিত হতো।
২. কনৌজ : কনৌজে প্রতিহার রাজবংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। সে সময়ে প্রতিহার রাজবংশের একটি শক্ত অবস্থান লক্ষ করা যায়।
৩. সিন্ধু : সম্রাট হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর রাজা শাশীর চাচ নামক জনৈক মন্ত্রী শুধু শাসনের অবসান ঘটিয়ে সিন্ধুতে স্বাধীন রাজবংশের গোড়াপত্তন করেন।
৪. বাংলা ও বিহার : ভারতের অপরাপর অঞ্চলের ন্যায় বাংলাতেও তখন কেন্দ্রীয় শক্তি ছিল না। তবে দীর্ঘকালীন অরাজকতা তথা মাৎস্যন্যায়ের অবসানে সপ্তম শতকে বাংলায় পাল বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই বলা যায়, আরবদের সিন্ধু বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলা ও বিহারে পাল বংশ শাসন করত।
৫. নেপাল ও আসাম : হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর বাংলার ন্যায় নেপাল ও আসাম স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়। তারা স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতে থাকে।
৬. আজমেরি ও দিল্লি : ভারতবর্ষে মুসলিম অভিযানের প্রাক্কালে আজমেরি ও দিল্লিতে প্রতাপশালী চৌহান বংশ প্রভৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। । এ সময় চৌহান বংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি ছিলেন পৃথ্বীরাজ।
৭. কাশ্মীর : কর্কট রাজবংশীয় দুর্লভবর্ধনের অধীনে কাশ্মীর সপ্তম শতকে একটি স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠাতা নরপতি হিসেবে দুর্লভ রায় দোর্দণ্ড প্রতাপের সাথে ঐক্যবদ্ধ | শাসনকার্য পরিচালনা করতেন।
৮. মালব : প্রতিহার রাজপুতদের দ্বারা শাসিত উত্তর ভারতের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র ছিল মালব। এ বংশীয় শাসকরা ছিল অতিশয় স্বাধীনচেতা। শাসনকার্য পরিচালনায় তারা ছিল অপ্রতিদ্বন্দী।
দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যসমূহ মুসলিমদের সিন্ধু বিজয়ের প্রাক্কালে দক্ষিণ ভারতে যেসব রাজবংশ রাজত্ব করত সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
১. পরবগণের সাম্রাজ্য : এ সময় পরবগণের সাম্রাজ্য দক্ষিণ ভারতের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সিংহবিষ্ণু ছিলেন এ রাজ্যের শক্তিশালী নৃপতি। অষ্টম শতকের শুরুতে পরব ও চাণক্যদের মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষ শুরু হয়।
২. পান্ড, চোল ও চেরা রাজ্য : দাক্ষিণাত্যে তখন পাত, চোল ও চেরা রাজ্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে এ রাজ্যগুলো সর্বদা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত থাকত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা সন্তোষজনক ছিল না।
রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার ফলেই মুসলিম আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ভারতবাসী একক শক্তি হিসেবে দণ্ডায়মান হতে পারেনি। ফলে মুসলমানগণ অতি সহজে তাদের পরাজিত করে ভারতে স্বীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল। যদি তোমাদের আজকের মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।