সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ |
সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ
- অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির উত্তর ভারত বিজয় কাহিনি উল্লেখ কর।
- অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির উত্তর ভারত বিজয় সম্পর্কে কি জান?
উত্তর : ভূমিকা : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি একজন সাম্রাজ্যবাদী শাসক ছিলেন। স্যার উইনসলেন বলেন, আলাউদ্দিনের রাজত্বকাল হতেই সালতানাতের সাম্রাজ্যবাদী যুগের সূচনা হয়।
প্রকৃতপক্ষে তার শাসনকাল থেকেই মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তারের যুগের সূচনা হয়। এ মুহাম্মদ বিন তুঘলক এবং আওরঙ্গজেব ছাড়া অন্যকোনো শাসক ভারতে এত বড় বিশাল সাম্রাজ্যের উপর মুসলিম আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হয়নি।
• আলাউদ্দিন খলজির উত্তর ভারত বিজয় কাহিনি : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ক্ষমতা লাভের পর যে সকল অঞ্চল জয় করে তার মধ্যে উত্তর ভারত অন্যতম। নিয়ে আলাউদ্দিন খলজির উত্তর ভারত বিজয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১. গুজরাট বিজয় : ১২৯৭ সালে স্বীয় ভ্রাতা উলুখ খান ও মন্ত্রী নসরাত খানের নেতৃত্বে আলাউদ্দিন খলজি গুজরাটের বিরুদ্ধে এক অভিযান পরিচালনা করেন।
গুজরাটের দ্বিতীয় কর্নদের পরাজিত হয় এবং তার স্ত্রী কমলা দেবী বন্দি হন। রাজা কর্ণদের পরাজিত হয়ে তার কন্যা দেবলা দেবীকে নিয়ে দেবগিরির রাজা রামচন্দ্রের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করে।
২. ক্যাথে দখল : গুজরাট বিজয় করার পর সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ১২৯৭ সালে কাছে বিজয় করেন। বিজয়ীরা প্রচুর ধনরত্ন লুণ্ঠন করে।
অতঃপর মুসলিম বাহিনী প্রচুর ধনরত্ন, রাণী কমলা দেবী এবং কাছুর নামে এক সুদানি দোজাসহ দিল্লিতে ফিরে আসেন।
৩. রণখণ্ডোর বিজয় : বর্ণখন্ডোরের রাজা হাম্মিদের কতিপয় নব-মুসলিম বিদ্রোহীকে আশ্রয় দান করে সুলতানের বিরাগভাজন হন। ১৯৯৯ সালে সুলতান উলুঘ খান ও মন্ত্রী নসরত খানের নেতৃত্বে এক অভিযান পরিচালনা করেন।
কিন্তু নসরত খান অভিযান পরিচালনাকালে নিহত হন। তাদের বিপর্যয়ে দিল্লি থেকে নতুন বাহিনী এসে রাজা হাম্মিদেরকে পরাজিত করে।
৪. চিতোর বিজয় : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি রানা রতন সিংহের অনিন্দ্য সুন্দরী স্ত্রী পদ্মিনীকে লাভ ও সাম্রাজ্য বিস্তারে চিত্তোর অভিযান করেন।
তিনি নিজে যুদ্ধে পারদর্শী মেবারের রাজপুতদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। রাজপুতেরা বীর বিক্রমে যুদ্ধ করেও পরাজিত হয়।
৫. মালব বিজয় : ১৩০৫ সালে সুলতান আইনুল মূলক মুলতানিকে মালব অভিযানে প্রেরণ করেন। তিনি একই সালের নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে মালব রাজ রায়মল্লদেবকে পরাজিত করে মানব বিজয় করেন। এভাবে উত্তর ভারতে সুলতানের বিজয় ধারা অব্যাহত থাকে।
৬. উজ্জয়িনী, চান্দেরী, মাস্ত ও ধর বিজয় : মালব জয় করার পর সুলতান উজ্জয়িনী, চান্দেরী, মাস্ত ও ধর বিজয়ে মুসলিম বাহিনী প্রেরণ করেন। মুসলিম বাহিনী পর্যায়ক্রমে উজ্জয়িনী, চান্দেরী, মাস্ত ও ধর বিজয় করে মুসলিম সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।
৭. মারওয়ার বিজয় : ১৩০৮ সালে সুলতান, রাজস্থানের অন্যতম রাষ্ট্র মারওয়ার বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন। অভিযানে মারওয়ার রাজা শীতল দেবকে পরাজিত করে মারওয়া বিজয় করেন। আর উক্ত অঞ্চলের শাসনভার মালিক কালামউদ্দিনের উপর ন্যস্ত হয়।
৮. ঝালোর বিজয় : সুলতান ঝালোরাজ কনোরা দেবের বিরুদ্ধে গুলে বেহেশত নামে এক নারীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন । অভিযানে গুলে বেহেশত ও তার পুত্র পরাজিত হয়।
তারা পরাজিত হলে দিল্লি থেকে আরেক বাহিনী প্রেরণ করা হয়। দিল্লি থেকে প্রেরিত বাহিনীর সাথে কনোরা যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির রাজত্বকালে মুসলিম সাম্রাজ্য ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। তার উত্তর ভারত জয়ের মাধ্যমে তার গতিশীলতা আরো বৃদ্ধি পায়।
তিনি ছিলেন মধ্যযুগীয় সাম্রাজ্যবাদের মূর্ত প্রতীক। রাজত্বের প্রথমভাগে সুলতানের নিরঙ্কুশ সফলতা তার মানসিক ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়।
তিনি আলেকজান্ডারের ন্যায় দিগ্বিজয়ের নেশায় বিভোর হন। আর উদ্দেশ্য সফলতা লাভ করার জন্য সুলতান উত্তর ভারত জয় করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ। যদি তোমাদের আজকের সুলতান আলাউদ্দিনের উত্তর ভারত অভিযান সম্পর্কে লেখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।