বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.

বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও
বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও

বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও

  • অথবা, মুঘল সম্রাট বাবরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 

উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষের ইতিহাসে বাবর এক চিরস্মরণীয় নাম। কেননা বাবর ছিলেন ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট। অতি অল্প বয়সেই বাবর পিতৃহারা হয়ে নানা রকম প্রতিকূলতাকে জয় করে অল্প বয়সেই সম্রাট হন। 

পরবর্তীতে নিজ মেধা ও বুদ্ধির দ্বারা এক সময় জয় করেন ভারতবর্ষ। পরবর্তীতে তার বংশধররা ভারতবর্ষে স্থায়ী এক সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।

→ বাবরের পরিচয় : বাবর হচ্ছে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। ইতিহাসে তিনি অতি আলোচিত ও স্মরণীয় এক ব্যক্তি। নিম্নে বাবরের পরিচয় তুলে ধরা হলো :

১. জন্ম : ১৪৮৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কিস্তানের এক ক্ষুদ্র রাজ্য ফরগনায় জহিরউদ্দিন মুহম্মদ বাবর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ওমর শেখ মির্জা এবং মাতার নাম কুতলুঘ নিগার খানম। তার পিতা ছিলেন ফরগনার অধিপতি ।

২. বংশ পরিচয় : বাবরের বংশ ছিল অনেক সম্ভ্রান্ত এবং তার ধমনীতে এশিয়ার দুইজন বীরের রক্ত প্রবাহিত ছিল। পিতার দিক থেকে বাবর ছিলেন তৈমুর লং-এর অধস্তন পঞ্চম পুরুষ অর্থাৎ এদিক দিয়ে তিনি তুর্কি। 

আবার মাতার দিক থেকে তিনি ছিলেন চেঙ্গিস খানের অধস্তন চতুর্দশ পুরুষ অর্থাৎ মঙ্গোলীয় । কেননা তার মাতা ছিলেন মধ্য এশিয়ার মোঙ্গল নেতা ইউনুস খানের কন্যা । তাই বাবর প্রকৃত অর্থে মোঙ্গল নয় বরং তুর্কি বংশীয় ছিল।

৩. বাল্যকাল : বাবরের বাল্যকাল সম্বন্ধে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। তবে তিনি বাল্যকাল অতিবাহিত করেছেন তার শিক্ষক শেখ মজিদ এবং পিতামহী দৌলত বেগমের তত্ত্বাবধানে। 

এ দুইজন ব্যক্তির প্রতি বাবরের শ্রদ্ধাভক্তি অনেক বেশি ছিল। বাবর বাল্যকালে তার শিক্ষক শেখ মজিদের কাছে আরবি, ফারসি ও তুর্কি ভাষা অধ্যয়ন করেন এবং এ সকল ভাষায় পারদর্শী হয়ে উঠেন।

অন্যদিকে অভিজ্ঞ পিতামহের কাছ থেকে তিনি আত্মনির্ভরশীল, সাহসী ও কর্তব্যপরায়ণ হতে শিখেছেন। তাছাড়া বাল্যকাল থেকেই বাবর ছিলেন অত্যন্ত দুঃসাহসী।

৪. সিংহাসন লাভ : বাবরের বয়স যখন মাত্র ১১ বছর তখন তার পিতা বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পিতার এ আকস্মিক মৃত্যুতে মাত্র ১১বছর বয়সে বাবর ফরগনা রাজ্যের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। 

তবে সিংহাসনে আরোহণের পর থেকেই বাবরের নিকট আত্মীয়স্বজনের অনেকেই বাবরের সামনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হন ।

৫. সমরকন্দ জয় : বাল্যকাল থেকেই বাবর তার পূর্বপুরুষ তৈমুর লং-এর রাজধানী সমরকন্দ অধিকারের স্বপ্ন দেখতেন। কেননা সমরকন্দ ছিল মধ্য এশিয়ার একটি অত্যন্ত সৌন্দর্যময় ও সমৃদ্ধশালী নগরী। 

সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বাবর তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে মনযোগী হন এবং সমরকন্দের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দিলে সেই সুযোগ গ্রহণ করেন এবং ১৪৯৭ সালে সমরকন্দ জয় করেন। কিন্তু পরবর্তীতে নিজ রাজ্যের ষড়যন্ত্রের কথা শুনে সমরকন্দ ছেড়ে ফরগনায় ফিরে আসেন।

৬. বিতাড়িত ও সম্বলহীন : ফরগনায় ফিরে আসার ৪ বছরের মাথায় ১৫০১ সালে বাবর পুনরায় সমরকন্দ আক্রমণ করেন। কিন্তু এবার তিনি পরাজিত হন। 

এ সময় বাবর ফরগনা থেকেও বিতাড়িত হন। এ সময় থেকে পুরো এক বছর কাল বাবর নিরাশ্রয় ও সহায় সম্বলহীন হিসেবে জীবনযাপন শুরু করেন। 

এ সময় বাবরের দুরবস্থা চরম আকার ধারণ করলেও | তিনি সাহস হারাননি। ১৫০৩ সালে বাবর পুনরায় ফরগনা ও সমরকান্দ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালান। কিন্তু এবারও ব্যর্থ হয়ে তিনি কাবুলের দিকে পা বাড়ান।

৭. মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা : ১৫০৪ সালে বাবর কাবুলের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের সুযোগ নিয়ে কাবুলের শাসককে পরাজিত করে কাবুল দখল করে নেন এবং পুনরায় রাজকীয় মর্যাদা লাভ করেন । 

এর মধ্যে বাবর বোখারা ও সমরকন্দ জয় করলেও তা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পরবর্তীতে ১৫১৯ সালে তিনি সিন্ধুনদ, অতিক্রম করে বজৌর, পাঞ্জাবের ঝিলম নদীর তীরবর্তী ভেরা, কুতুব ও চেনাব নদীর অববাহিকা জয় করেন। 

পর্যায়ক্রমে বাবর বদাখশান, কান্দাহার, লাহোর এবং পরবর্তীতে দিল্লি ও আগ্রা জয় করেন ১৫২৬ সালে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

৮. মৃত্যু : মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবুরের তার ভারতবর্ষ বিজয়ের ফল বেশিদিন ভোগ করতে পারেননি । 

দীর্ঘ তিন মাস অসুস্থ থাকার পর ১৫৩০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মাত্র ৪৮ বছর বয়সে বাবর আগ্রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাবর ছিলেন উচ্চবংশীয় একজন বীর ও নির্ভীক সাহসিকতার অধিকারী। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও বুদ্ধিমান। 

পরবর্তীতে তার জীবনের প্রত্যেকটি ধাপে বাবর এ সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন। তাই আমরা দেখতে পাই একদিনকার নিঃসম্বল বাবর হয়ে উঠেন ভারতবর্ষের প্রথম মুঘল সম্রাট।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও । যদি তোমাদের আজকের বাবর কে ছিলেন। বাবরের পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ