দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ
দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ

দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ

  • অথবা, দিল্লি সালতানাতের পতনের চারটি কারণ উল্লেখ কর ।
  • অথবা, দিল্লি সালতানাতের পতনের কারণ উল্লেখ কর।
  • অথবা, দিল্লি সালতানাতের পতনের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও ।

উত্তর : ভূমিকা : উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েই একটি বংশ বা জাতির ইতিহাসে রচিত হয়। প্রবল দাপটের মধ্য দিয়ে যে জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয় আবার কাল প্রবাহে সেই জাতির পতন ঘটে।

ইতিহাসে অন্যান্য বংশের ন্যায় শেষ পর্যন্ত ১৫২৬ সালে দুর্দান্ত প্রতাপশালী দিল্লি সালতানাতের পতন সূচিত হয়। দীর্ঘদিন ভারতীয় উপমহাদেশে দিল্লি সালতানাত শাসন করে গেলেও সুলতান ইব্রাহিম লোদীর পতনের মধ্য দিয়ে সালতানাতের পতন ঘটে।

→ দিল্লি সালতানাতের পতনের কারণ : দিল্লি সালতানাত পতনের পেছনে অনেকগুলো কারণ বিদ্যমান। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. ঐতিহাসিক মতবাদ : উত্থান, পতন ও বিকাশ এ তিনটি নিয়ম প্রতিটি জাতির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। সুতরাং দিল্লি সালতানাতের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। 

ঐতিহাসিক ইবনে খালদুন এর মতে, “একটি রাজবংশ তার শৌর্যবীর্য ও প্রতিপত্তি নিয়ে ১০০ বছর টিকে থাকে। দিল্লি সালতানাতের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক মতবাদের আলোকে দিল্লি সালতানাতের পতন ঘটে।

২. উত্তরাধিকারী নীতির অভাব : সুলতানি আমলে সিংহাসনে উত্তরাধিকারী নির্ণয়ে কোনো সঠিক নিয়মকানুন ছিল না। 

তাই কোনো সুলতানের মৃত্যুর সাথে সাথে আমির ওমরাহগণ স্বীয় স্বার্থে রাজপরিবরের একাধিক সদস্যকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে সমর্থন প্রদান করত। এভাবে উত্তরাধিকার নির্ণয়ের সুষ্ঠু নীতির অভাবে সাম্রাজ্য দুর্বল হতে থাকে, ফলে দিল্লি সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ।

৩. কেন্দ্রীয় শাসনের দুর্বলতা : দিল্লি সালতানাত প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে ধীরে ধীরে দিল্লি সাম্রাজ্য ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে লাগল। সীমানা বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রীয় প্রশাসন থেকে শাসন পরিচালনা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। 

কেন্দ্রীয় শাসন কর্তৃপক্ষের দুর্বলতার সুযোগে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বাধীন রাজ্য গড়ে ওঠে। এসব সাম্রাজ্যের বিদ্রোহ দিল্লি সালতানাতের পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল।

৪. জাতীয়তাবোধের অভাব : দিল্লি সালতানাত পতনের অন্যতম কারণ ছিল জাতীয়তাবোধের অভাব ছিল। শাসক ও শাসিতের মধ্যে কোনো সম্পর্ক না থাকায় দিল্লি সালতানাতের পতন ঘটে। 

একটি সাম্রাজ্যের যখন জাতীয়তাবোধের অভাব হয় তখন সে অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবে বিদ্রোহ সংগঠিত হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক আক্রমণ মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি যার ফলে দিল্লি সাম্রাজ্য এমন অবস্থায় থাকার কারণে এর পতন ঘটে। 

ঐতিহাসিক হেগ বলেন “জাতীয়তাবোধের অভাবে দিল্লি শাসক ও শাসিতদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি। যার ফলে তাদের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।

৫. ইব্রাহিম লোদীর ব্যর্থতা : অনেক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ থাকা সাপেক্ষে সর্বশেষ লোদী শাসক সুলতান ইব্রাহিম লোদীর দুর্বলতার কারণে দিল্লি সালতানাত পতনের শেষ ঘণ্টা বেজে উঠে । 

১৫২৬ সালে আফগান আমির বাবর লোদী সাম্রাজ্যে আক্রমণ চলালে সে আক্রমণ মোকাবিলা করতে সুলতান ইব্রাহিম লোদী ব্যর্থ হয় তারই ফলে দিল্লি সালতানাতের পতন ঘটে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতে সুলতানি আমলে দীর্ঘ তিন শতাব্দী ধরে ব্যাপক ঐতিহ্য ও নব অধ্যায়ের সূচনা করলেও সর্বশেষে শাসকদের দুর্বলতা অপরিণামদর্শিতার কারণে তারা অনিবার্য পতন ডেকে আনে। 

নানবিধ প্রত্যক্ষ কারণে জাতীয় জীবনে বিপর্যয় ও নৈতিক অধঃপতন এবং প্রজাসাধারণের স্বার্থকে উপেক্ষা করার কারণেই দীর্ঘদিনের লালিত দিল্লি সালতানাতের পতন ঘটে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ। যদি তোমাদের আজকের দিল্লির সালতানাতের পতনের পাঁচটি কারণ লিখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ