কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন
কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন

কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন

  • অথবা, কাকে কাশ্মীরের আকবর বলা হয়? 
  • অথবা, কাশ্মীরের আকবর বলা হতো কাকে? 

উত্তর : ভূমিকা : ১৩১৫ খ্রিষ্টাব্দে সোয়াত হতে আগত শাহ মীর্জা নামে জনৈক ভাগ্যান্বেষী দুঃসাহসী মুসলিম কাশ্মীরের হিন্দুরাজ সিনহা দেবের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন এবং হিন্দুরাজার মৃত্যু হলে তিনি কাশ্মীরের সিংহাসনে আরোহণ করেন। 

শাহ মীর্জা “শামস উদ্দিন শাহ” উপাধি ধারণ করে ১৩৪৬ খ্রিষ্টাব্দে কাশ্মীরের সিংহাসন আরোহণ করেন। প্রথমে কাশ্মীর দিল্লি সুলতানি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল না বটে কিন্তু চতুর্দশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে কাশ্মীরে মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন ঘটে । নিঃসন্দেহে বলা যায়, শামসউদ্দিন শাহ ছিলেন কাশ্মীরের প্রথম মুসলিম শাসক।

→ কাশ্মীরের আকবর : ১৪২০ খ্রিষ্টাব্দে কুতুবউদ্দিনের দ্বিতীয় পুত্র শাহীখান কাশ্মীর সিংহাসনে আরোহণ করে জৈন- উল-আবেদীন উপাধি গ্রহণ করেন ।

কাশ্মীরের মুসলিম শাসকদের মধ্যে জৈন-উল-আবেদীন ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ এবং দ্বিমত নেই। তিনি ছিলেন প্রজাহিতৈষী, উদারমনা ও পারদর্শী শাসক। 

তাহার রাজত্বকালে প্রজাগণ সুখ ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করত। প্রজার মঙ্গল সাধনের জন্য তিনি রাজ্যের সর্বত্র পথেঘাটে দস্যুতস্করের উপদ্রব ও অত্যাচার নিবারণ করতে চেষ্টা করেন। 

তিনি গ্রাম্য শাসনের দায়িত্বে গ্রামের প্রতিনিধিগণের উপর অর্পণ করেন। তিনি মুদ্রানীতির উন্নয়ন সাধন করে, জনসাধারণের উপর হতে করভার লাঘব করে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির চূড়ান্ত মূল্য নির্ধারণ করে এবং নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কার্যাবলির দ্বারা প্রজাবর্গের অপরিসীম উপকার করেন। তিনি প্রজাহিতৈষী উদারনীতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তার সহিষ্ণুতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তার পিতা সিকান্দার শাহের আমলে যে সকল ব্রাহ্মণ রাজ্য ত্যাগ করে গিয়েছিল, তিনি তাদের ফিরিয়ে আনেন। 

অমুসলিমদের উপর থেকে জিজিয়া কর উঠিয়ে দেন এবং প্রজা বর্গকে ধর্মীয় স্বাধীনতা অর্পণ করেন। তার প্রজাহিতৈষণা ও পরমত সহিষ্ণুতা পরবর্তীকালে সম্রাট আকবরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। 

তিনি নিজ মাতৃভাষা ব্যতীত ফারসি, হিন্দি ও তিব্বতীয় ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেছিলেন। তিনি শিক্ষা, সাহিত্য, শিল্প ও সংগীতের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। যার ফলে তার আমলে কাশ্মীরে এসব বিদ্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছিল। 

তার সাহিত্য ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতার ফলে মহাভারত ও রাজতরঙ্গিনী নামক কাশ্মীরের ইতিহাস সংস্কৃতি ভাষা হতে ফারসি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল । ইহা ভিন্ন আরবি ও ফারসি ভাষায় রচিত অসংখ্য গ্রন্থ হিন্দি ভাষায় তিনি অনুবাদ করেছিলেন।

উদার মনোভাব, প্রজাহিতৈষী, উদারনীতি ও পরমত সহিষ্ণুতার জন্য জৈন-উল-আবেদীনকে “কাশ্মীরের” “আকবর” বলে ইতিহাসে অভিহিত করা হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জৈন-উল-আবেদীন ছিলেন একজন উদারমনা, প্রজাহিতৈষী ও পারদর্শী শাসক। তিনি অন্যান্য ধর্মের প্রতি পরমতসহিষ্ণু ছিলেন। 

তার শাসনকালে প্রজাগণ সুখ ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করত। তিনি শিক্ষা, সাহিত্য, শিল্প ও সংগীতের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। এসব কিছুর জন্য জৈন-উল-আবেদীনকে “কাশ্মীরের আকবর" বলা হতো।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন । যদি তোমাদের আজকের কাশ্মীরের আকবর কাকে বলা হয় এবং কেন পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ