মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝায়

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝায় জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝায় । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মনসবদারি প্রথা কি  আকবরের মনসবদারি প্রথা সম্পর্কে কি জান লিখ
মনসবদারি প্রথা কি  আকবরের মনসবদারি প্রথা সম্পর্কে কি জান লিখ

মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝায়

  • অথবা, “মনসবদারী প্রথার' উপর একটি টীকা লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষের ইতিহাসে সম্রাট আকবর ছিলেন শ্রেষ্ঠ শাসক । তিনি শাসনতান্ত্রিক প্রতিভার জন্য ইতিহাসে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। 

তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো সেনাবাহিনী সংগঠিতকরণ। এক্ষেত্রে তার মনসবদারী প্রথা ছিল ভারতীয় সামরিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।

→ মনসবদারী প্রথা : মনসব শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘পদ' বা 'মর্যাদা'। আর এ পদের অধিকারীকে বলা হয় মনসবদার। সম্রাট আকবর সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও দক্ষতার অভাব লক্ষ করে তার আশু সংস্কারের প্রয়োজনে ১৫৭১ সালে শাহবাজখানকে মীর বকশী নিয়োগ করেন। 

তার সাহায্যে সেনাবাহিনী সংস্কারে তিনি যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ইতিহাসে তাই মনসবদারী প্রথা নামে পরিচিত। ঈশ্বরী প্রসাদ বলেছেন, “সমগ্র সামরিক বাহিনী মনসবদারী প্রথার উপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে।"

নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো :

১. বিভিন্ন পর্যায়ের মনসব : ঐতিহাসিক আবুল ফজলের মতে ৬৬ রকমের মনসবদার ছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ৩৩ ধরনের বেশি মনসবদার ছিল না। 

সর্বনিম্ন মনসবদারদের অধীনে ১০ জন সৈন্য এবং সর্বোচ্চ মনসবদারদের অধীনে ১০ হাজার জন সৈন্য থাকত। 

তবে দশ হাজারী, আট হাজারী, সাত হাজারী মনসব সাধারণত রাজ পরিবারের লোকদের জন্য সংরক্ষিত থাকত। প্রত্যেক মনসবদার জায়গীরের পরিবর্তে নির্দিষ্ট বেতন পেতেন।

২. মনসবদারদের বেতন : সেনাবাহিনীর নতুন সংস্করণে মনসবদারদের বেতন ব্যবস্থা চালু করা হয়। ঐতিহাসিক ডব্লিউ.এইচ. মোরল্যান্ডের মতে, পাঁচ হাজারী মনসবদার ১৮ হাজার টাকা বেতন পেতেন।

৩. জাত ও সওয়ার : জাত ছিল মনসবদারদের ব্যক্তিগত পদ। কিন্তু এর সাথে যুক্ত কতকগুলো উদ্ধৃত ঘোড় সওয়ারের একজন আলাদা পরিচালক থাকেন। তাকে বলা হয় সওয়ার। 

যার জাত ও সওয়ার পথ সমান থাকত তাকে প্রথম শ্রেণির মনসবদার ধরা হতো। যার সওয়ার জাতের অর্ধেক তাকে দ্বিতীয় শ্রেণির মনসবদার বলা হতো। আর যার সওয়ার জাতের অর্ধেকেরও কম থাকত তাকে তৃতীয় শ্রেণির মনসবদার বলা হতো।

৪. মনসবদারী প্রথার সুফল : মনসবদারী প্রথার মাধ্যমে আকবরের সৈন্যবাহিনী শক্তিশালী হয় এবং সৈন্যবাহিনীতে ঐক্য স্থাপিত হয়। এ প্রথার সুফলগুলো হলো :

(i) এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকার একটি সুবৃহৎ সেনাদল পোষণ করতে পারত।

(ii) সাম্রাজ্যের কোনো অংশে গোলযোগ দেখা দিলে মনসবদারগণ সে বিদ্রোহ দমন করতে পারতেন।

(iii) মনসবদারগণ স্বজাতির লোক নিয়োগ করতেন বলে দলের আনুগত্য লাভ ও সংহতি রক্ষা পেত।

(iv) গুণ ও দক্ষতার ভিত্তিতে পদোন্নতি হয় বলে প্রত্যেক সল যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাত।

৫. মনসবদারী প্রথার কুফল : এ প্রথার যেমন কতগুলো সুফল রয়েছে তেমনি কিছু কুফলও রয়েছে। তা হলো : 

(i) এ প্রথা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

(ii) একটি সংহতিপূর্ণ জাতীয় বাহিনী গঠনের পথে এ প্রথা ছিল অন্তরায় স্বরূপ।

(iii) মনসবদারগণ নিজ নিজ লোক নিয়োগ করতো বলে সৈন্যরা তাদের প্রতি আস্থাশীল ছিল। সম্রাটের প্রতি নয়। 

(iv) এ ব্যবস্থা মনসবদারদের পারস্পরিক কলহের পথ প্রশস্ত করে। 

(v) এ ব্যবস্থার ফলে কেন্দ্রীয় সরকার শক্তিশালী হতে পারত না। 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সম্রাট আকবর মনসবদারী প্রথার মাধ্যমে এক অসীম শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলেন। 

তিনি এ প্রথার মাধ্যমে প্রতিভায় শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেন এবং তার শাসন ব্যবস্থায় এ প্রথা শৃঙ্খল ও নিয়মানুবর্তিতায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। যদিও এ প্রথার কিছু দোষ-ত্রুটি ছিল। তবুও এ ব্যবস্থা যথেষ্ট প্রশংসনীয় ছিল।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝায়

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝায় লিখ। যদি তোমাদের আজকের মনসবদারি প্রথা কি | আকবরের মনসবদারি প্রথা সম্পর্কে কি জান লিখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ