আলপ আরসালানের পরিচয় তুলে ধর

আলপ আরসালানের পরিচয় তুলে ধর
আলপ আরসালানের পরিচয় তুলে ধর

আলপ আরসালানের পরিচয় তুলে ধর

  • অথবা, আলপ আরসালানের সম্পর্কিত একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা তুলে ধর ।

উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় শাসনামল কতকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম সেলজুক বংশ। সেলজুক বংশের দ্বিতীয় শাসক ছিলেন আলপ আরসালান তিনি একজন স্বনামধন্য শাসক ছিলেন। 

রাজ্যের সংহতি বিধানে আলপ আরসালানের ভূমিকা ছিল যেমন অভূত, তেমনি বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিরোধেও তিনি ছিলেন অদম্য। 

চারিত্রিক গুণাবলির ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন মহানুভব। তার প্রচেষ্টায় সেলজুক সাম্রাজ্য স্থায়িত্ব লাভের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।

→ আলপ আরসালানের পরিচয় : আলপ আরসালান ছিলেন সেলজুক বংশের ২য় শাসক। তিনি ১০৩০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। তার মূল নাম ছিল মুহাম্মদ বেগ বিন দাউদ চাঘরাই।

১০৫৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি খোরাসানের শাসন কর্তা হন এবং ১০৬৪ খ্রিস্টাব্দে সেলজুক বংশের সুলতানের পদ দখল করেন। 

মূলত আলপ আরসালানের শাসনামল থেকেই সেলজুক বংশ রাজবংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আব্বাসীয় খলিফা কাইয়ুম কর্তৃক তিনি সুলতান উপাধি পান এবং পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা লাভ করেন। খলিফা তাকে আজাদ- উদ-দৌলা উপাধি প্রদান করেছিলেন।

আলপ আরসালানের কৃতিত্ব :

১. মুসলিম প্রাচ্য গৌরবোজ্জ্বল শাসনের সূচনা : সেলজুক সুলতান আলপ আরসালান মুসলিম সাম্রাজ্য সুদৃঢ় ও সুসংহত করার জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল মুসলিম শাসরে শুভ সূচনা করেন। মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তৃতিতে তিনি ব্যাপক অবদান রাখেন ।

২. সাম্রাজ্য সুসংহতকরণ : আলপ আরসালানের রাজত্বকাল তুর্কী উপজাতিগণ দলে দলে মুসলিম বাহিনীতে যোগদান করলে তার পক্ষে আব্বাসীয় সাম্রজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে পুনর্দখল করে একটি সুসংহত রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।

৩. দুর্বল আব্বাসীয় খলিফাদের মতো সৌহার্দপূর্ণ ব্যবহার : বুয়াইয়া আমীরগণ দুর্বল আব্বাসীয় খলিফাদের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানলেও সেলজুক সুলতানগণ খলিফাদের সাথে সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন। আলপ আরসালানের অনুসারীরাও তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করতেন ।

৪. নতুন রাজধানী প্রতিষ্ঠা : আলপ আরসালানের অন্যতম কৃতিত্ব হলো রাজধানী স্থানান্তর। তিনি পূর্বাঞ্চল খোরাসান থেকে রাজ্যের কেন্দ্রস্থল ইস্পাহানে রাজধানী স্থানান্তরকরণ করেন। এর মাধ্যমে বিদ্রোহ বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা দূর করা আলপ আরসালানের পক্ষে অনেকটা সহজ হয়েছিল।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আলপ আরসালান সমসাময়িক মুসলিম শাসকদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। এশিয়া মাইনরে ইসলামের প্রভুত্ব সম্প্রসারণে আলপ আরসালানের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। আব্বাসীয় খিলাফতের সংহতি বিধানে আলপ আরসালানের কৃতিত্ব ছিল সত্যই প্রশংসার দাবিদার।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ