কালাউনের হাসপাতাল সম্পর্কে কি জান লিখ

কালাউনের হাসপাতাল সম্পর্কে কি জান লিখ
কালাউনের হাসপাতাল সম্পর্কে কি জান লিখ

কালাউনের হাসপাতাল সম্পর্কে কি জান লিখ

  • অথবা, সুলতান কালাউনের হাসপাতালের একটা বর্ণনা দাও।

উত্তর : ভূমিকা : দ্বাদশ শতাব্দীর শেষদিকে বাহরি মামলুক বংশের এক বিরল প্রতিভার অধিকারী শাসক ছিলেন সুলতান কালাউন। 

সুলতান রুকনউদ্দিন বাইবার্সের পর তিনিই ছিলেন বাহারি মামলুকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সুলতান। তাঁর শাসনকালের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য অবদান হচ্ছে তাঁর হাসপাতাল।

→ সুলতান কালাউনের হাসপাতাল : ১২৭৯ সালে সুলতান সাইফুদ্দীন কালাউন জোরপূর্বক সিংহাসন দখল করলেও তিনি ছিলেন জনহৈতিষী ও প্রজারঞ্জক শাসক। তাঁর জনহিতকর কার্যাবলির সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল তাঁর হাসপাতাল ।

নিম্নে সুলতান কালাউনের হাসপাতাল সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

১. নির্মাণের পটভূমি : একবার সুলতান কালাউন তাঁর পেটের ব্যথায় প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন ফলে সুলতানকে দামেস্কের নূরী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। 

এবং ঐ হাসপাতালে বসেই মিশরের কায়রোয় একটি অত্যাধুনিক মানের হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ।

২. হাসপাতালের নির্মাণকাল : সুলতান কালাউন পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় ১২৮৪ সালে মিশরে বিখ্যাত আল মারিস্তান আল মনসুরি হাসপাতাল নির্মিত হয়। এটি ছিল তৎকালীন মিশরের প্রথম আধুনিক ও শ্রেষ্ঠতম হাসপাতাল ।

৩. হাসপাতালের বৈশিষ্ট্য : কালাউন তাঁর মূল হাসপাতালের সাথে একটি বিদ্যালয় ও মসজিদ নির্মাণ করেন। প্রতিটি রোগের জন্য ছিল আলাদা আলাদা বিভাগ। 

জ্বর, চক্ষুরোগ, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও ছিল তাঁর হাসপাতালে । তাছাড়া হাসপাতালের নিজস্ব পরীক্ষাগার, পাকশালা, ভেষজশালা, শৌচাগার ও গুদামঘরও ছিল।

৪. হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা : কালাউনের হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ছিল চমৎকার। এখানে রোগ বিষয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করার জন্য ছিল একটি আলোচনা কক্ষ। 

তাছাড়া এখানে নারী ও পুরুষ রোগীর জন্য স্বজাতীয় চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হতো। সুলতান হাসপাতাল পরিচালনার জন্য প্রতি বছর হাসপাতালের ফান্ডে ১০ লক্ষ দিরহাম জমা করে দিতেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান সাইফুদ্দীন কালাউন মামলুক শাসকদের মধ্যে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। 

১২৭৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি জনগণের কল্যাণে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, তন্মধ্যে আল মারিস্তান আল মনসুরি হাসপাতাল অন্যতম। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ