মিশরে আব্বাসীয় খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
মিশরে আব্বাসীয় খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও |
মিশরে আব্বাসীয় খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
- অথবা, মিশরে আব্বাসীয় খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : মিশরে আব্বাসীয় খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠা মামলুক শাসনামলে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দে হালাকু খানের বাগদাদ ধ্বংসের মাধ্যমে আব্বাসীয় খিলাফতের পতন ঘটে।
কিন্তু এ পতন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১২৬১ খ্রিস্টাব্দে মামলুক শাসক বাইবার্স মিশরে আব্বাসীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
→ আব্বাসীয় খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠা : ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দে হালাকু খানের নিকট আব্বাসীয় বংশের শেষ খলিফা আল মুস্তাসিম বিল্লাহ নিহত হলে আব্বাসীয় বংশের বিলুপ্তি ঘটে।
মুসলিম খিলাফতের ইতিহাসে এ সময় এক চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করে। কারণ ১২৫৮ থেকে ১২৬১ সাল পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বে প্রায় ৪ বছর খলিফা শূন্য ছিল।
মামলুক সুলতান বাইবার্স মিশরে সুন্নি খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা পোষণ করেন। মোঙ্গলদের আক্রমণ থেকে দুইজন আব্বাসীয় খলিফা প্রাণে বেঁচে যান তাদের মধ্যে একজন হলেন আব্বাসীয় আল জাহিরের পুত্র আহমদ এবং অপরজন হলেন সর্বশেষ আব্বাসীয় খলিফা আল মুস্ত াসিমের চাচা আল হাকিম।
সুলতান বাইবার্স আহমদকে কায়রোতে আমন্ত্রণ জানান। আহমদ কায়রোতে আগমন করে। আহমদের মনে সন্দেহ জাগে যদি বাইবার্স তাকে আব্বাসীয় বংশ প্রতিষ্ঠার কাজে সাহায্যে করে, তাহলে তা একসময় নিজের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়াবে।
কিন্তু বাইবার্স আহমদকে অনুরোধ করলে তিনি তা অগ্রাহ্য করতে পারেনি। আহমদকে বাইবার্স বাগদাদ আক্রমণের জন্য উৎসাহ দেখান এবং তাকে কায়রো ত্যাগ করতে বলেন।
আহমদ অল্প সৈন্য নিয়ে বাগদাদ আক্রমণ করলে, মোঙ্গল শাসনকর্তা কারাবুঘারের নিকট পরাজিত ও নিহত হন। আহমদের মৃত্যুর পর আব্বাসীয় আল হাকিমকে মিশরে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বাইবার্স তাকে খলিফা আল-মুসতানসির উপাধী দিয়ে প্রদান করেন। জাকজমক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খিলাফতে অধিষ্ঠিত করা হয়।
খলিফা আল মুসতানসিরের বংশধররা (১২৬১-১৫১৭ খ্রি.) প্রায় ২৫০ বছরের অধিক সময় খলিফা হিসেবে মিশরের মামলুক শাসকদের কৃপার পাত্র ছিলেন।
খলিফার কোনো রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ছিল না। তারা নামেমাত্র খলিফা ছিলেন । সবকিছু মামলুক সুলতানগণ নিয়ন্ত্রণ করতেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মিশরে আব্বাসীয় খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে মামলুক সুলতান বাইবার্সের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি মিশরে আব্বাসীয় খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেও সকল ক্ষমতাই তার নিজ হাতে রাখেন।
মূলত বাইবার্স নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য আব্বাসীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারপর ও আব্বাসীয় খিলাফত টিকে ছিল এটাই মুসলিমদের শ্রেষ্ঠ পাওয়া।