শশাঙ্ক কে ছিলেন । শশাঙ্কের পরিচয় দাও
শশাঙ্ক কে ছিলেন । শশাঙ্কের পরিচয় দাও |
শশাঙ্ক কে ছিলেন । শশাঙ্কের পরিচয় দাও
- অথবা, স্বাধীন গৌড় রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে? তার পরিচয় দাও ৷
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক একটি বিখ্যাত নাম। এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, শশাঙ্ক শুধু গৌড়ের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হননি, বরং গৌড় রাজ্যের সীমানা মগধ ও উড়িষ্যার উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছিলেন তিনি ৬০৬ থেকে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গৌড় তথা বাংলার স্বাধীন নৃপতি হিসেবে শাসন করেন ।
→ শশাঙ্কের পরিচয় : শশাঙ্কের বাল্যজীবন সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। কিংবা তিনি কিভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা দখল করেন তার সার্বিকভাবে দিক নির্দেশনার অভাব রয়েছে।
তবে বিভিন্ন উৎস হতে শশাঙ্ক সম্পর্কে যতটুকু পাওয়া যায় ততটুকুই সম্বল। শশাঙ্কের বংশ বা বাল্যজীবন সম্বন্ধে সঠিক কিছু জানা যায়নি।
কিংবা তিনি কিভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা দখল করেন তারও কোনো সঠিক নির্দেশ পাওয়া যায় না । প্রাচীন রোহিতাশ্বরে (রোহতাসগড়) গিরিগাত্রে একটি শিলার ছাঁচ পাওয়া গেছে তাতে ‘শ্রীমহাসামন্ত শশাঙ্ক’-এর নাম খোদিত রয়েছে।
অনুমান করা হয় যে, এই ‘মহাসামন্ত শশাঙ্ক' ও গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক একই ব্যক্তি ।সেই ক্ষেত্রে মনে করতে হয় যে, গৌড়রাজ্যে সার্বভৌম ক্ষমতা দখল করার আগে শশাঙ্ক মহাসামন্ত ছিলেন এবং খুব সম্ভবত পরবর্তী গুপ্ত বংশীয় মহাসেন গুপ্তই তাঁর অবিরাজ ছিলেন।
কিন্তু স্বীকার করতেই হবে, এই সিদ্ধান্ত নেহায়েত আনুমানিক, প্রমাণ করার কোনো উপায় নেই। কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করেন যে, শশাঙ্ক মৌখরি রাজ্যের অধীন সামন্ত ছিলেন।
আবার কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছেন যে, শশাঙ্কের অপর নাম ছিল নরেন্দ্রগুপ্ত এবং তিনি গুপ্তবংশের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন।
ড. আর. জি. বসাকের মতে, শশাঙ্ক গৌড়ের রাজা জয়নাগের বংশধর। শশাঙ্কের বংশ পরিচয় সম্পর্কে এসব মতামত পরোক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে প্রদান করা হলেও শশাঙ্কের পরিচয় সংক্রান্ত প্রত্যক্ষ পরিচয় এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।
তবে তিনি কিভাবে এবং ঠিক কোন বছরে গৌড়দেশে সার্বভৌম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন তা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় যে, ৬০৬ খ্রিষ্টব্দে তিনি গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে শশাঙ্ক গৌড়ে স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং গৌড়ের রাজধানী করেন কর্ণসুবর্ণকে।
তিনি ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বীরদর্পে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। যদিও শশাঙ্কের বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানার উৎস কম তারপরও বিভিন্ন ঐতিহাসিক মতামতের ভিত্তিতে আমরা এটুকু জানতে পারি।