দক্ষিণ পূর্ব বাংলার চন্দ্র রাজাদের রাজত্বকাল নির্ণয় কর

দক্ষিণ পূর্ব বাংলার চন্দ্র রাজাদের রাজত্বকাল নির্ণয় কর
দক্ষিণ পূর্ব বাংলার চন্দ্র রাজাদের রাজত্বকাল নির্ণয় কর

দক্ষিণ পূর্ব বাংলার চন্দ্র রাজাদের রাজত্বকাল নির্ণয় কর

  • অথবা, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্র রাজাদের রাজত্বকাল সম্পর্কে বর্ণনা পাও

উত্তর : ভূমিকা : দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় মতগুলো রাজবংশ ছিল তার মধ্যে চন্দ্র রাজবংশ অন্যতম। চন্দ্র রাজবংশের শ্রেষ্ঠ শাসকদের যোগ্যতা, দক্ষতা, ন্যায়পরায়ণতার কারণে চন্দ্র বংশ ইতিহাসের পাতায় এত গুরুত্বপূর্ণ। 

চন্দ্রবংশের প্রত্যেক শাসক তাদের নিজ যোগ্যতাবলে চন্দ্রবংশকে তখনকার সময়ে উল্লেখযোগ্য করে তুলেছেন।

দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার চন্দ্রবংশের রাজাদের রাজত্বকাল : চন্দ্রবংশের যে কয়জন রাজা ছিল তাদের মধ্যে স্পৃহা ছিল যার দরুণ চন্দ্রবংশ সে সময় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছিল নিম্নে চন্দ্রবংশের রাজাদের রাজত্বকাল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হলো :

১. পূর্ণচন্দ্র : চন্দ্রবংশের প্রথম রাজা পূর্ণচন্দ্র সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। তার রাজত্বকালের সঠিক হিসাব বের করা যায়নি। 

তবে একথা জানা যায় পূর্ণচন্দ্র ছিলেন একজন স্বামী। সম্ভবত কোন এক রাজবংশের প্রধান সেনাপতি ছিলেন পূর্ণচন্দ্র।

২. সুবর্ণচন্দ্র : পূর্ণচন্দ্রের পুত্র ছিল সুবর্ণচন্দ্র। পূর্ণচন্দ্রের পর তার পুত্র সুর্ণচন্দ্র চন্দ্রবংশের সিংহাসনে বসেন। তবে সিংহাসনে আরোহণের সঠিক কোন হিসাব বা দিন তারিখ জানা যায়নি। 

তবে তিনি পিতার মত একজন ভূস্বামী ছিলেন। তিনি নিজে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ ও কল্যাণের জন্য কাজ করেন। পরবর্তীতে চন্দ্রবংশের সকল রাজাই বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ ও কল্যাণে কাজ করেন।

৩. ত্রৈলোক্য চন্দ্র : ত্রৈলোক্যচন্দ্র দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্রবংশের প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজা হিসেবে অনুমিত। তার রাজত্বকাল ৪০০-৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল বলে মনে করা হয়। তাঁর পিতার নাম সুবর্ণচন্দ্র।

ত্রৈলোক্যচন্দ্রের রাজত্বকালের কোনো লিপি প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে পণ্ডিতগণের ধারণা, সম্ভবত তিনিই চন্দ্রবংশের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 

প্রথম দিকে তিনি রোহিতাগিরির ভূ- স্বামী বা সামন্তরাজা ছিলেন। পরবর্তী চন্দ্ররাজাদের তাম্রশাসন- এ তাঁকে হরিকেল রাজার ক্ষমতার আধার বা প্রধান অবলম্বন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হয়তো এ অবস্থান থেকেই তিনি চন্দ্রদ্বীপ এর স্বাধীন নৃপতি হয়েছিলেন।

ত্রৈলোক্যচন্দ্র সম্পর্কে চন্দ্রবংশের প্রায় সব ভাম্রশাসনেই সাধারণভাবে প্রশংসা করা হয়েছে। শ্রীচন্দ্রের পশ্চিম ভাগ তাম্রশাসনে তৈলোক্যচন্দ্রের সমস্তট জয়ের উল্লেখ রয়েছে। 

পূর্ববর্তী দেব রাজাদের শাসনকেন্দ্র দেবপর্বত ছিল তাঁর ক্ষমতার উৎস এবং সে স্থানের সৈন্যদল নিয়েই তিনি সমতট অধিকার করেছিলেন বলেও মনে করা হয় এবং মহারাজাধিরাজ, উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।

পড়হচন্দ্রের ময়নামতী তাম্রশাসনে উল্লিখিত হয়েছে যে, ত্রৈলোক্যচন্দ্রের শাসনকালে বঙ্গ অভ্যূন্নতিশালী ছিল। কল্যাণচন্দ্রের ঢাকা তন্ত্রশাসনে ত্রৈলোক্য কর্তৃক গৌড়দের পরাস্ত করার উল্লেখ রয়েছে।দিয়ে তিনি যুদ্ধকালীন সময় পলায়ন করেন। 

চোল সেনাপতিদের সাথে যুদ্ধে এবং এসময় তারা ভীত দুর্বল হয়ে যায় এবং তিনি পরাজিত হন। শেষ রাজা গোবিন্দ্রচন্দ্রের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে চন্দ্রবংশের শাসন অবসান হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, চন্দ্রবংশের যে ক'জন রাজার নাম পাওয়া যায় তার মধ্যে সফল যোগ্য দক্ষ শাসক তারা স্বীয় মেধা ও যোগ্যতার বলে পালবংশের শাসন ক্ষমতার পর চন্দ্রবংশের উজ্জ্বল যুগের সূচনা করেন। 

চন্দ্রবংশের যে কজন রাজার পরিচয় পাওয়া যায় তার মধ্যে ত্রৈলোক্যচন্দ্র ছিলেন এ বংশের মহানায়ক। তবে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে তাদের দক্ষতা পরিচয় দিয়েছেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ