ধর্মপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর । ধর্মপালের অবদানসমূহ তুলে ধর
ধর্মপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর । ধর্মপালের অবদানসমূহ তুলে ধর |
ধর্মপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর । ধর্মপালের অবদানসমূহ তুলে ধর
- অথবা, বাংলার পাল সাম্রাজ্যের শাসক হিসেবে ধর্মপালের ভূমিকা আলোচনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : শতককালের অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে গোপাল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন বাংলার পালবংশকে সুদৃঢ়করণে ও প্রতিপত্তিদানে ধর্মপালের ভূমিকা অপরিসীম।
বাংলায় পালবংশ প্রায় ৪০০ বছর শাসন করেছিলেন। বাংলায় যে কয়জন পাল শাসক শাসন করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মপাল। ধর্মপালই পালবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ।
→ পাল সাম্রাজ্যের শাসক হিসেবে ধর্মপালের ভূমিকা/কৃতিত্ব : গোপাল পুত্র ধর্মপাল ছিলেন পাল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ বিজেতা। তিনি বাংলার গৌড় অঞ্চলকে একটি সমৃদ্ধিশালী দেশে পরিণত করেন, যা অন্যান্য পাল রাজাদের মধ্যে লক্ষ করা যায়নি।
শুধু গৌড় অঞ্চলেই তার শাসনব্যবস্থা সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি উত্তর ভারতের কাণ্যকুঞ্জ অধিকার করে সেখানে তার একনিষ্ঠ ব্যক্তি চক্রায়ূদকে দায়িত্ব প্রদান করেন।
এভাবে তিনি তার সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। পিতা গোপালের ন্যায় ধর্মপাল বৌদ্ধধর্মের অনুসায়ী ছিলেন। তিনি তার রাজত্বকালে বহু বৌদ্ধ মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন।
তার নির্মিত বৌদ্ধ বিহারগুলো হলো ভাগলপুরের বিক্রমশীল বিহার বা বৌদ্ধমঠ, পাহাড়পুরের সোমপুর বিহার এবং ওদন্তপুরেও একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করেন।
এছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ। তারানাথের মতে, তিনি ৫০টির মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন।
ধর্মপালের রাজত্বকাল সম্পর্কে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। তবে অধিক স্বীকৃত মত হলো তিনি ৩৫/৪০ বছর বাংলা শাসন করেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ধর্মপাল পিতার কাছে উত্তরাধিকারসূত্রে পান শুধু গৌড় রাজ্য কিন্তু স্বীয় বুদ্ধিমত্তা ও সামরিক প্রতিভার দ্বারা তিনি পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন সমগ্র বাংলা ও উত্তর ভারতের কাণ্যকুঞ্জ সাম্রাজ্যের অধিকর্তা। এ হিসেবে ধর্মপালকে পালবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা যায় ।