গোপালের কৃতিত্ব আলোচনা করো । রাজা গোপালের কৃতিত্ব/অবদান সংক্ষেপে লিখ

গোপালের কৃতিত্ব আলোচনা করো । রাজা গোপালের কৃতিত্বঅবদান সংক্ষেপে লিখ
গোপালের কৃতিত্ব আলোচনা করো । রাজা গোপালের কৃতিত্বঅবদান সংক্ষেপে লিখ

গোপালের কৃতিত্ব আলোচনা করো । রাজা গোপালের কৃতিত্ব/অবদান সংক্ষেপে লিখ

  • অথবা, পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গোপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর ।

উত্তর : ভূমিকা : শশাঙ্কের মৃত্যুর পর প্রায় একশত বছর বাংলায় চলছিল ঘোর অরাজকতা। এ সময় অনৈক্য আত্মকলহ যেন মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। 

বহিঃশত্রুর ক্রমাগত আক্রমণ এ অবস্থাকে আরো সংকটময় করে তুলেছিল। এ পরিস্থিতিকে ‘মাৎস্যন্যায়ের' যুগ বলা হয়। এ যুগের অবসান ঘটিয়ে আগমন ঘটে গোপালের। 

তিনি এ বাংলায় দীর্ঘ চারশত বছরের স্থায়ী একটি রাজবংশের ভিত্তি স্থাপন করেন। এ পালদের শাসনামল গুরুত্বের সাথে ইতিহাসে সংরক্ষিত রয়েছে ।

→ গোপালের কৃতিত্ব/অবদান : পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছেন। তিনি প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন। 

নিচে গোপালের কৃতিত্ব আলোচনা করা হলো :

১. অরাজকতার অবস্থান : বাংলার প্রথম স্বাধীন সার্বভৌম গৌড়াধিপতি শশাঙ্কের মৃত্যুর পর আন্তঃবিদ্রোহ ও পার্শ্ববর্তী রাজাদের উপর্যুপরি আক্রমণের ফলে বাংলায় এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং রাজতন্ত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। 

এ পরিস্থিতিকে "মাৎস্যন্যায়ের যুগ বলে আখ্যায়িত করা হয়। গোপাল আবির্ভূত হয়েই এ অরাজকতার অবসান ঘটান। তিনি তার নিজ যোগ্যতা ও দক্ষতায় কীর্তিমান পুরুষে পরিণত হয়েছেন।

২. রাজবংশের প্রতিষ্ঠা : গোপালের একটি অন্যতম কৃতিত্ব হলো মাৎস্যন্যায়ের মতো চরম অবস্থার অবসান ঘটিয়ে একটি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করা। এ রাজবংশটি পরবর্তীতে প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করেছিল। 

গোপালের যোগ্য উত্তরসূরীদের মাধ্যমে এরকম একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাই রাজবংশ প্রতিষ্ঠায় গোপালের কৃতিত্ব মূল্যায়ন করতেই হবে।

৩. কেন্দ্রীয় শাসন প্রতিষ্ঠা : গোপাল একজন সুচতুর শাসক ছিলেন। তিনি সমস্ত অরাজকতা অর্থাৎ মাৎস্যন্যায়ের মতো অরাজকতার অবসান করে একটি সুশৃঙ্খল শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করে। 

তিনি পালবংশের দীর্ঘ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর রাজ্যের বিভিন্ন অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে একটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করন। 

এ কেন্দ্রের লক্ষ্যই ছিল সমস্ত বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটানো। এ কেন্দ্রে নিয়োজিত সকল রাজকর্মচারী ও সামন্ত রাজারা গোপালের এ সুচতুরতায় মুগ্ধ হয়ে তার আনুগত্য স্বীকার করেন।

৪. সমগ্রবাংলা জয় : গোপালের পিতা ছিলেন একজন যোদ্ধা। তাই তিনি ও একজন দক্ষ যোদ্ধা ছিলেন। যার ফলে সিংহাসনে আরোহণ করেই তিনি কামরূপ দখল করেন। 

তিনি কতগুলো অঞ্চল জয় করেছিলেন সে সম্পর্কে সঠিক জানা না গেলেও তিনি যে সমগ্র বাংলা জয় করেছিলেন তা জানা যায়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পালবংশর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গোপাল যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি একজন প্রতিভাবান শাসক ছিলেন। তাইতো চরম বিশৃঙ্খল রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

পালবংশের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গোপালের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়েছে। তার অসামান্য অবদানের কারণেই বাংলায় এক নতুন যুগের সূচনা হতে পেরেছিল।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ