পাল বংশের উত্থান সম্পর্কে আলোচনা কর

পাল বংশের উত্থান সম্পর্কে আলোচনা কর
পাল বংশের উত্থান সম্পর্কে আলোচনা কর

পাল বংশের উত্থান সম্পর্কে আলোচনা কর

  • অথবা, পাল বংশের উত্থানের উৎসগুলো আলোচনা কর।
  • অথবা, পাল বংশের উত্থান সম্পর্কে যা জান লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : বাংলার প্রথম স্বাধীন সার্বভৌম গৌড়াধিপতি শশাঙ্কের মৃত্যুর পর অন্তবিদ্রোহ ও পার্শ্ববর্তী রাজাদের উপর্যুরপি আক্রমণের ফলে বাংলায় এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং রাজতন্ত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। 

সমসাময়িককালের পর্যটক হিউয়েন সাং, লামা তারানাথের বিবরণ, বৌদ্ধ গ্রন্থ আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প প্রভৃতির বিবরণে এ অস্থির অবস্থা ও খণ্ড বিখণ্ড গৌড় রাজ্যের চিত্র পাওয়া যায়। এ অবস্থায় বাংলায় নিজ গৌরবে অধিষ্ঠিত হয় পাল সাম্রাজ্য। এ বংশ দীর্ঘ ৪০০ বছর শাসন করেছিল।

→ পালবংশের উত্থানের উৎসসমূহ : প্রাচীন ইতিহাস রচনার জন্য কিছু উৎসের দরকার। পালবংশের উত্থানের উৎসগুলোর মাধ্যমে অনেক কিছু জানা যায়। 

যেমন- পর্যটক হিউয়েন সাং ও লামাতারনাথের বিবরণ কলহনের রজতরঙ্গনী, বৈদ্যদেবের কৌমলি তাম্রলিপি, খালিম তাম্রলিপি, আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প বানগড় তাম্রলিপি প্রভৃতি উৎসসমূহ থেকে পালবংশের উত্থান সম্পর্কে জানা যায়, 

নিচে এ উৎসগুলো তুলে ধরা হলো :

১. খালিমপুর তাম্রলিপি : পালবংশের উত্থানের ইতিহাস খালিমপুর তাম্রলিপিতে অনেকটাই মুদ্রিত হয়েছে। গোপালের ক্ষমতায় আরোহপ্রসঙ্গে খালিমপুর তাম্রলিপির চতুর্থ শ্লোকে বলা হয়েছে “দুর্বলের প্রতি সবলের মাৎস্যান্যায় দূর করার অভিপ্রায়ে প্রকৃতিপুঞ্জ রাজাকে রাজলক্ষ্মীর কর গ্রহণ করাইয়া কুলচূড়ামণি গোপাল নামক সেই প্রসিদ্ধ রাজা হতে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন।

২. বৈদ্যদেবের কৌমলী তাম্রলিপি : পালবংশের ইতিহাস সম্পর্কে অনেকটা তথ্য দেয় বৈদ্যদেবের কৌমলী তাম্রলিপি। সে লিপিতে ধর্মপাল ও দেবপাল সম্পর্ক অনেক বিবরণ পাওয়া যায়।

৩. ভাগলপুরের তাম্রশাসন : পালবংশ সম্পর্কে জানার আর একটি উৎস হলো ভাগলপুরের তাম্রশাসন। ভাগলপুরে প্রাপ্ত তাম্রলিপি থেকে দেবপাল সম্পর্কে অনেক কিছু জানা অনেক তথ্য পাওয়া যায়। এ তাম্রলিপিতে দেবপাল রাজনীতি, রাজ্যবিজয় প্রভৃতি সম্পর্কে জানা যায় ।

৪. জয়পালের তাম্রশাসন : জয়পালে প্রাপ্ত তাম্রশাসন থেকে প্রথম মহীপাল, দ্বিতীয় মহীপাল, দেবপাল সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

৫. হিউয়েন সাং ও লামা তারনাথের বিবরণী : পালবংশ সম্পর্কে জানার আর একটি অন্যতম মাধ্যম হলো পর্যটক হিউয়েন সাং ও লামা তারানাথের বিস্তারিত বিবরণী। তাদের বিবরণীতে পালবংশের ইতিহাস কুক্ষিগত হয়ে উঠেছে।

উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, পালবংশের ইতিহাস রচনায় বিভিন্ন তাম্রশাসন, পর্যটকদের বিবরণ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল। 

কিন্তু পরবর্তীতে তার পুত্র ধর্মপাল ক্ষমতায় এসে সমগ্র সাম্রাজ্যকে সুউচ্চ সম্প্রদায় নিয়ে যান। এ পালবংশই দীর্ঘদিন বাংলার বুকে নিজেদের অস্তিত্ব টিকে রেখেছিল । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ