সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ইতিহাসে এত বিখ্যাত কেন

সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ইতিহাসে এত বিখ্যাত কেন
সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ইতিহাসে এত বিখ্যাত কেন

সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ইতিহাসে এত বিখ্যাত কেন

  • অথবা, বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের কৃতিত্ব পর্যালোচনা কর।
  • অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের কৃতিত্ব ও চরিত্র সম্পর্কে যা জান লিখ।
  • অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের চরিত্র ও কৃতিত্ব আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : হুসেন শাহী বংশের শাসন বাংলার স্বাধীন সালতানাতের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আলাউদ্দিন হুসেন শাহ হাবশী শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলায় শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনে সচেষ্ট হন। 

হলেন শাহী শাসনামলের চারজন সুলতানের মধ্যে আলাউদ্দিন হুসেন শহ ছিলেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ। তার রাজত্বকালে বাংলার প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়।

— আলাউদ্দিন হুসেন শাহের পরিচয় : আলাউদ্দিন হুসেন শাহের বাল্যজীবন ও ক্ষমতালাভ সম্বন্ধে তেমন স্পষ্ট কিছু জানা যায় না। 

রিয়াজ-উস-সালাতীনের লেখক সলীমের মতে হুসেন শাহ তার পিতা সৈয়দ আশরাফুল হোসেন ও ভ্রাতা ইউসুফের সাথে সুদূর তুর্কিস্থানের তিরমিজ শহর থেকে বাংলায় আসেন এবং রাঢ়ের চাঁদপাড়া মৌজায় বসতি স্থাপন করেন। 

সেখানকার কাজী তাদের দুই ভাইকে শিক্ষা দেন এবং তাদের উচ্চ বংশমর্যাদার কথা শুনে হুসেনের সঙ্গে তার নিজ কন্যার বিবাহ নেন। 

হুসেন শাহ বাংলার রাজধানী গৌড়ে যান এবং মুজাফফর শাহের অধীনে চাকরি নেন। নিজ যোগ্যতাবলে তিনি হাবশী সুলতান মুজাফফর শাহের রাজত্বকালে উজির পদে প্রতিষ্ঠিত হন।

সিংহাসনে আরোহণ : আলাউদ্দিন হুসেন শাহ বিচক্ষণ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। মুজাফফর শাহের অত্যাচার ও হুসেন শাহের দুরভিসন্ধির কারণে সেনাবাহিনীর অনেকেই সুলতানের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। 

হুসেন শাহ বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। বিদ্রোহীরা মুজাফফর শাহকে হত্যা করে। রাজ্যের প্রধান আমাত্যগণ মিলিত হয়ে হুসেন শাহকে সুলতান মনোনীত করেন।

→ সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের কৃতিত্ব : বাংলার মুসলিম সুলতানদের মধ্যে আলাউদ্দিন হুসেন শাহই সম্ভবত সর্বশ্রেষ্ঠ। উড়িষ্যা থেকে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ভূভাগে তার নাম সুপরিচিত। সুশাসক হিসেবে তাঁর খ্যাতি জনগণের মনে গভীর রেখাপাত করেছিল। 

নিম্নে তার কৃতিত্বসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন : হুসেন শাহ গৌড়ের সিংহাসনে আরোহণ করার পর আল-দুনিয়া ওয়া আল-দীন আবু আল মুজাফফর হুসেন শাহ উপাধি গ্রহণ করেন এবং নিজ নামে মুদ্রা প্রবর্তন করেন। 

হুসেন শাহ অল্প সময়ের মধ্যেই রাজ্যে পূর্ণ শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। অরাজকতা সৃষ্টিকারী সৈন্যদলকে কঠোরহস্তে দমন করেন। 

হুসেন শাহ পাইকদের দল ভেঙে দিয়ে নতুন এক রক্ষীবাহিনী গঠন করেন হাবশীদের তিনি রাজ্য থেকে বিতাড়িত করেন। 

তাদের পরিবর্তে তিনি সৈয়দ, মোঙ্গল, আফগান ও হিন্দুদেরকে উচ্চ রাজপদে নিযুক্ত করেন। রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বিধানের উদ্দেশ্যে তিি অভিজ্ঞ রাজকর্মচারী নিযুক্ত করেন।

২. রাজধানী স্থানান্তর : রাজধানী স্থানান্তর সুলতান নিরাপত্তার জন্য তিনি পান্ডুয়া থেকে দিনাজপুর জেলার একডালায় রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।

৩. সামরিক কৃতিত্ব : আলাউদ্দিন হুসেন শাহের ছাব্বিশ বছরের রাজত্বকালে বাংলা মুসলিম রাজ্যের চতুর্দিকে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে। 

অভ্যন্তরীণ শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করে সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ রাজ্যসীমা সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করেন। হুসেন শাহের সামরিক কৃতিত্বসমূহকে পাঁচভাগে ভাগ করা যায়।

(ক) সিকান্দার লোদীর সঙ্গে সন্ধি ও উত্তর বিহার অধিকার, 

(খ) কামতা-কামরূপ ও আসাম অভিযান, 

(গ) উড়িষ্যা অভিযান,

(ঘ) ত্রিপুরার সঙ্গে সংঘর্ষ এবং

(৩) চাইগ্রাম বিজয় 

৪. সিকান্দর সোনীর সঙ্গে সন্ধি ও বিহার অভিযান : সিংহাসনে আরোহণের দুই বছরের মধ্যেই হুসেন শাহের সঙ্গে শিল্পির সুলতান সিকান্দার লোদীর সংঘর্ষ উপস্থিত হয়। 

জৌনপুরের হুসেন শাহ, শর্কীকে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে দিল্লির সুলতান সিকান্দার লোদী ক্রুদ্ধ হয়ে ১৪৯৫৪, একদল সৈন্য হুসেন শাহের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। 

হুসেন শাহও বাধা দেওয়ার জন্য তার পুত্র দানিয়েলের নেতৃত্বে এক সেনাবাহিনী পাঠান। শেষপর্যন্ত দুইপক্ষ সন্ধি স্থাপন করে স্ব-স্ব রাজ্যে ফিরে যায়। 

কারণ ও মুঙ্গের আবিষ্কৃত শিলালিপি থেকে জানা যায়, হুসেন শাহ সমগ্র উত্তর বিহার এবং দক্ষিণ বিহারের কিয়দংশ দখল করেছিলেন।

৫. কামতা-কামরূপ ও আসাম অভিযান : বাংলার পূর্ব-উত্তর সীমান্তে কামতা ও কামরূপের সাথে বাংলার সুলতানদের প্রায়ই বুদ্ধ লেগে থাকত। সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহও কামতা ও কামরূপে অভিযান প্রেরণ করেন। 

দীর্ঘকাল অবরোধের পর হুসেন শাহ জয়লাভ করেন এবং কামতা-কামরূপ মুসলিম রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং পুত্র দানিয়েলকে বিজিত রাজ্যের শাসনভার অর্পণ করা হয়। 

গোলাম হুসায়ন সলীমের রিয়াজ- উস-সালাতিন গ্রন্থে হুসেন শাহ কর্তৃক আসাম অভিযানের উল্লেখ আছে। এক বিশাল অশ্বারোহী ও পদাতিক সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনী সহকারে এই অভিযানে প্রেরণ করা হয়েছিল। 

হুসেন শাহের ভয়ে আসামের রাজা রাজ্য ফেলে পালিয়ে যান। তখন ইসেন শাহ বিরাট সৈন্যবাহিনীর নেতৃত্বে তার ছেলেকে রেখে গৌরবের বেশে স্বদেশে ফিরে আসেন। 

কিন্তু বর্ষাকালে সুযোগ ইয়ে আসামের রাজা মুসলিম বাহিনীকে আক্রমণ করে পরাজিত করে। এভাবে প্রাথমিক সাফল্যের পর হুসেন শাহের আসাম অভিযান শোচনীয় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল।

৬. উড়িষ্যা অভিযান : মুদ্রার উল্লেখ থেকে জানা যায় যে, উড়িষ্যার সঙ্গে হুসেন শাহের সংঘর্ষ হয়েছিল। ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজ ভ্রমণকারী বারবোসা এই সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করেছিলেন।

উড়িষ্যার মাদলা পঞ্জিকায় ১৫০৯ খ্রিষ্টাব্দে উড়িষ্যা গৌড়ের মুসলিম সেনা কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়। 

সমসাময়িক উড়িষ্যারাজ প্রতাপ রুদ্রদেব ছিলেন প্রতাপশালী রাজা। তবে হুসেন শাহের সে সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

৭. ত্রিপুরার সঙ্গে সংঘর্ষ : সুলতান হুসেন শাহ এবং ত্রিপুরার রাজার মধ্যেও অনেকদিন ধরে যুদ্ধবিগ্রহ চলেছিল। ত্রিপুরার রাজাদের ইতিহাস 'রাজমালায়' এই সংঘর্ষের উল্লেখ আছে। 

সোনারগাঁও এ প্রাপ্ত হুসেন শাহের এক শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, ১৫১৩ খ্রিস্টাব্দের পূর্বেই তিনি ত্রিপুরারাজ ধন্যমানিকের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

গৌড় মল্লিক ও হাতিয়াল খানের অধীনে প্রেরিত অভিযান ত্রিপুরা বাহিনী কর্তৃক বিতাড়িত হয়। তবে পরবর্তীকালে অভিযান যে সাফল্য লাভ করেছিল তা লিপি প্রমাণ থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায়।

৮. চট্টগ্রাম বিজয় : রাজমালা থেকে জানা যায় যে, ধন্য-মানিক্য কিছু কালের জন্য চট্টগ্রামের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। তবে চট্টগ্রাম স্থায়ীভাবে হুসেন শাহের অধিকারেরও বহু প্রমাণ সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যে ও অন্যান্য সূত্রে রয়েছে। 

চট্টগ্রামের উপর হুসেন পর্তুগিজ দূত জাও-না ১৫১৭ থেকে ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে শাহী শাসকদের অধিকার অক্ষুণ্ণ ছিল। সিলভেরিওর উক্তি অনুসারে মনে হয় যে, ১৫১৭ খ্রিষ্টাব্দে হুসেন শাহ চট্টগ্রাম অধিকার করেছিলেন।

৯. দক্ষ শাসক : হুসেন শাহ সাধারণ অবস্থা থেকে নিজ ক্ষমতাবলে রাজসিংহাসন অধিকার করেছিলেন। যুদ্ধ-বিগ্রহ, অত্যাচার ও অনাচারের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে তিনি রাজ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা স্থাপন করেছিলেন। 

সুশাসক হিসেবে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ তাঁর রাজত্বের প্রথম দিকেই যে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

১০. হিন্দুদের উচ্চপদে নিয়োগ : শাসনক্ষেত্রে হুসেন শাহ যে উদার ধর্মীয়নীতি অবলম্বন করেছিলেন, তা বিভিন্ন উচ্চ রাজপদে হিন্দু কর্মচারীদের নিয়োগ থেকে বোঝা যায়। 

নিঃসন্দেহে তিনি রাজকর্মচারীদের নিয়োগে ধর্ম অপেক্ষা যোগ্যতার সম্মান দিয়েছেন। তাঁর রাজ্যের উজির ছিল পুরন্দর খান। রূপ ও সনাতন দুই ভাই তার অত্যন্ত প্রিয় কর্মচারী ছিলেন। 

মুকুন্দ দাস ছিলেন তার প্রধান চিকিৎসক। তার দেহরক্ষী ছিলেন কেশবছত্রী। অনুপ ছিলেন মুদ্রামালার অধ্যক্ষ। এরূপ বহু হিন্দু তার দরবারে উচ্চপদে নিযুক্ত ছিল।

১১. বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা : হুসেন শাহ আরবি ও ফারসি সাহিত্যের সঙ্গে বাংলা সাহিত্যেরও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। বিজয় গুপ্ত, বিপ্রদাস ও যশোরাজ খান পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে তার নাম স্মরণ করেন। 

পরাগল খান ও ছুটি খানের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। কবীন্দ্র পরমেশ্বর ও শ্রীকর নন্দী বাংলা ভাষায় 'মহাভারত' প্রণয়ন করেছিলেন।

১২. নিষ্ঠাবান মুঘলমান : সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ একজন নিষ্ঠাবান মুঘলমান ছিলেন। তিনি মালদহে একটি বিরাট মাদরাসা নির্মাণ করেন এবং পান্ডুয়াকে নূর-কুতুব-ই-আলমের দরগাইতে বহু সম্পত্তি ও অর্থ দান করেন এবং মসজিদ নির্মাণ করেন।

১৩. স্থাপত্যশিল্পে অবদান : স্থাপত্যক্ষেত্রেও হুসেন শাহের অবদান রয়েছে। ইলিয়াসশাহী যুগে বাংলার মুসলিম স্থাপত্য শিল্পক্ষেত্রে যে নতুন ধারার সূচনা হয়েছিল, হুসেন শাহের সময়ে সেই ধারার প্রচলন ছিল। 

তবে সময়ে নির্মিত বহু মসজিদের মধ্যে 'গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ' এবং 'শুমতি দ্বার' শিল্প সৌন্দর্যে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে।

১৪. জনহিতকর কার্যাবলি : আলাউদ্দিন হুসেন শাহ প্রজারঞ্জক ও জনদরনি শাসক ছিলেন। তিনি প্রজাদের মঙ্গলের জন্য অনেক জনহিতকর কার্যাবলি সম্পাদন করেন। 

দুস্থ- দরিদ্রদের উপকারের জন্য দেশে অনেক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান নির্মান করেন এবং অনেক রাস্তা সরাইখানা নির্মাণ করেন। এসব রাস্তা সামরিক ও বেসামরিক চলাচলের জন্য উপযুক্ত ছিল।

— আলাউদ্দিন হুসেন শাহের চরিত্র : সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ ছিলেন বাংলার মুসলিম সুলতানদের মধ্যে সম্ভবত সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি ছিলেন একজন দুর্ধর্ষ সৈনিক, বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, এবং অসামান্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী। 

এক চরম অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে হুসেন শাহ বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। হাবশী শাসনের দুর্যোগময় অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে পুনরায় শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন করেন। 

আলাউদ্দিন হুসেন শাহ অসীম যোগ্যতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং শান্তি-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে তিনি বাংলার মুসলিম শাসনকে এক নবজীবন দান করেন। 

তার শাসনকালে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সামরিক ক্ষেত্রে সাফল্য ও বাঙালী প্রতিভার বহুমুখী বিকাশ সম্ভব হয়েছিল। 

আলাউদ্দিন হুসেন শাহ একজন উদার ও পরধর্মসহিষ্ণু শাসক ছিলেন। বহু হিন্দুকে তিনি উচ্চপদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তিনি একজন নিষ্ঠাবান মুলমান ছিলেন। 

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সকল প্রজার মঙ্গল সাধনে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। অনেক জনহিতকর কার্যাবলি তিনি সম্পাদন করেন। 

ফ্রান্সিস বুকানন তাই যথার্থই বলেছেন, “আলাউদ্দিন হুসেন শাহের চরিত্রে মহত্ত্বের অভাব ছিল না। হুসেন শাহ একজন নিষ্ঠাবান মুঘলমান হলেও হিন্দুদের প্রতি তিনি উদার নীতি পোষণ করতেন।"

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মধ্যযুগীয় বাংলায়, মুসলিম শাসনের ইতিহাসে আলাউদ্দিন হুসেন শাহের রাজত্বকাল নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গৌরবজনক। অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন করে হুসেন শাহ রাজ্যসীমা সম্প্রসারণে প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছিলেন। 

সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে এবং দেশের জনগণের সর্বাঙ্গীন সহযোগিতায় বাংলায় আবার মৌর্যবীর্ষের যুগের সূচনাই আলাউদ্দিন হুসেন শাহের কৃতিত্ব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ