সুবাদার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ দাও

সুবাদার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ দাও
সুবাদার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ দাও

সুবাদার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ দাও

  • অথবা, সুবাদার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বর্ণনা দাও।

উত্তর : ভূমিকা : সুবাদার শায়েস্তা খানের শাসনকাল ছিল বাংলার ইতিহাসে এক গৌরবময় যুগ। তার সুদীর্ঘ প্রায় ২৫ বছরের শাসনামলে বাংলার আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছিল। তিনিই প্রথম এদেশের শাসনব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেন।

শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা : নিম্নে শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বর্ণনা

দেওয়া হলো।

১. শায়েস্তা খানের পরিচয় : শায়েস্থা খান ছিলেন ইতিহাস প্রসিদ্ধ সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের ভাই এবং নূরজাহানের ভ্রাতা আসিফ খানের পুত্র। 

তিনি পূর্বে দাক্ষিণাত্যের সুবাদার ছাড়াও বেশ | কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে মুঘল সম্রাটদের অধীনে নিযুক্ত ছিলেন। 

৬৩ বছর বয়সে ১৬৬৩ সালে তিনি বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। তার সময় এদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়।

২. বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা : শায়েস্তা খানের আমলে এদেশ সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে। তার শাসনামলে বাংলার জনগণ সুখশান্তিতে বসবাস করে। 

কৃষি, শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতি হয়। সমসাময়িক ফরাসি পর্যটক বার্নিয়ারের বিবরণ হতে শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার প্রাচুর্য ও দ্রব্যমূল্যের মূলভাতা সম্বন্ধে জানতে পারা যায়। 

এ সময় এক টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। পর্যটক বার্নিয়ার বলেন, বিচিত্র পণ্য সম্ভারে তখন এদেশ ভরপুর ছিল। এসব পণ্য সম্ভাৱ বিদেশি বণিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। 

তার আমলে ১ টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যাওয়ার ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য শায়েস্তা খান ঢাকা হতে চলে যাবার পূর্বে দুর্গের পশ্চিম ভোরণ যার বন্ধ করার আদেশ দেন এবং সেখানে লেখা ছিল ভবিষ্যতে যে সুবাদারের আমলে ১ টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যাবে, তিনি ব্যতীত আর কেউ যেন এই তোরণ ধার না খোলেন। 

এর ফলে এ তোরণ দ্বার বহু বছর পর্যন্ত বন্ধ থাকে। নবাব সুজাউদ্দিনের আমলে যখন আবার ১ টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যায় তখন মহাসমারোহে দুর্গের পশ্চিম দ্বার খোলা হয়। 

তার সময়ে বাংলার স্থাপত্য শিল্পেও ব্যাপক উন্নতি ঘটে। ঢাকার ছোট কাটরা, বড়কাটরা, লালবাগ কেল্লা, পরীবানুর সমাধি, হুসেনী দালান তারই কৃতিত্ব বহন করে। ইংরেজ পর্যটক বাউরি বলেন, “ঢাকা An admirable city for its magnificence and multitude of inhabitants."

উপসংহার : শায়েস্তা খানের সুবাদারি বাংলার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় যুগ। সমসাময়িক ইতিহাস লেখকরা তার গুণের ও কৃতিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। 

তার সময়ে এদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। ঐতিহাসিক জন স্টুয়ার্ট বলেন, "শায়েস্তা খানের স্মৃতি এখনও এদেশে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ