গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ লেখ | গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ আলোচনা কর

গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ লেখ । গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ আলোচনা কর
গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ লেখ । গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ আলোচনা কর

গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ লেখ । গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ আলোচনা কর

  • অথবা, গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ বর্ণনা কর ।

উত্তর : ভূমিকা : গ্রামীণ পর্যায়ে উন্নয়নের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম । সাধারণত গ্রামীণ নেতৃত্ব বলতে গ্রামীণ সমাজকে ঘিরে যে নেতৃত্ব গড়ে ওঠে এবং বিকশিত হয় তাকে বুঝায়। 

স্থানীয় এলাকার বিভিন্নমুখী চাহিদা থেকেই গ্রামীণ নেতৃত্ব বিকাশ লাভ করে। গ্রামীণ নেতৃত্ব গ্রামবাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । 0 

গ্রামীণ নেতৃত্বের উৎসসমূহ : গ্রামীণ নেতৃত্বের উদ্ভব ও বিকাশে যেসব উৎস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেগুলোকে দুটি 'প্রধান ভাগে বিভক্ত করা যায় । যথা : 

ক. প্রাতিষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিক উৎস এবং 

খ. অপ্রাতিষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক উৎস । 

ক. প্রাতিষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিক উৎস : বাংলাদেশের সরকারের প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত স্থানীয় রাজনীতির যেসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি জড়িত এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দ্বারা যেসব প্রতিষ্ঠানের রূপ বা কাঠামো পরিচালিত হয়, সেগুলো হলো গ্রামীণ নেতৃত্বের প্রাতিষ্ঠানিক উৎস । প্রধান কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক উৎস হলো-

১. ইউনিয়ন পরিষদ : ইউনিয়ন পরিষদ গ্রামীণ নেতৃত্বের অন্যতম প্রধান উৎস। ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানসহ ওয়ার্ড সদস্যগণ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয় । কাজেই ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে গ্রামীণ নেতৃত্বের বিকাশ লাভ হয় ।

২. গ্রাম সরকার : গ্রামীণ নেতৃত্বের অন্যতম একটি উৎস হলো গ্রাম সরকার। গ্রামবাংলার অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করা গ্রামীণ নেতৃত্বের মূল কাজ। তাই গ্রাম সরকার গ্রামীণ নেতৃত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ।

৩. ক্লাব : গ্রামীণ সমাজে বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্লাব রয়েছে। এসব ক্লাবে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে গ্রামীণ সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন সামাজিক ও কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গ্রামীণ নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে ।

৪. স্কুল পরিচালনা কমিটি : স্কুল পরিচালনা পরিষদও গ্রামীণ নেতৃত্বের অন্যতম উৎস। স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে কাজ করার ফলে গ্রামীণ সমাজে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে ।

৫. হাটবাজার কমিটি : গ্রামীণ হাটবাজার কমিটি গ্রামীণ নেতৃত্বের একটি উৎস। হাট ও বাজার কমিটি গঠিত হয় স্থানীয় পর্যায়ের হাট ও বাজার তদারকির জন্য । এ হাটবাজার কমিটিতে যুক্ত থাকার মাধ্যমে গ্রামীণ নেতৃত্বের বিকাশ লাভ করে । 

খ. অপ্রাতিষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক উৎস : গ্রামীণ নেতৃত্বের অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস হচ্ছে সেসব প্রতিষ্ঠান যেগুলো বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কহীন। 

গ্রামীণ নেতৃত্বের প্রধান কয়েকটি অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস হলো গ্রামের মাতব্বর, মোড়ল, সরকার, প্রামাণিক ইত্যাদি। এসব উৎস গ্রামীণ নেতৃত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গ্রামীণ নেতৃত্ব বিকাশের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস রয়েছে। এসব উৎস গ্রামীণ সমাজে নেতৃত্ব তৈরির মাধ্যমে গ্রামবাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া কখনোই গ্রামীণ সমাজে উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ