কুমিল্লা মডেলের গুরুত্ব কি। বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের ভূমিকা আলোচনা কর

কুমিল্লা মডেলের গুরুত্ব কি। বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের ভূমিকা আলোচনা কর
কুমিল্লা মডেলের গুরুত্ব কি। বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের ভূমিকা আলোচনা কর

কুমিল্লা মডেলের গুরুত্ব কি। বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের ভূমিকা আলোচনা কর

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করার জন্য পল্লি উন্নয়নের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। 

পল্লি উন্নয়ন একাডেমির তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে কুমিল্লা সমবায় সমিতি। 'পরবর্তীতে তা সারা দেশে ‘কুমিল্লা মডেল' নামে সুপরিচিতি লাভ করতে থাকে। 

বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নকে গতিশীল করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে কুমিল্লা মডেল। যা বাংলাদেশব্যাপী আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে ।

● কুমিল্লা মডেলের গুরুত্ব : বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের গুরুত্ব নিম্নে তুলে ধরা হলো :

১. মূলধন গঠন : প্রান্তিক কৃষকেরা মূলধনের অভাবে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাচ্ছে না । কুমিল্লা সমবায়ে বাধ্যতামূলক সঞ্জয় দ্বারা মূলধন গড়ে তুলে কৃষকদের ঋণ হিসেবে দেওয়া হয় ।

২. কৃষির উন্নয়ন : কৃষকদের সংগঠিত করা থেকে শুরু করে কৃষি উপকরণ, ঋণদান, কৃষি যন্ত্র, সার, বীজ ইত্যাদি সরবরাহ করে। চলেছে কুমিল্লা সমবায় সমিতি। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে। কৃষি উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের অবদান অনস্বীকার্য ।

৩. উৎপাদন বৃদ্ধি : সারা দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কুমিল্লা সমবায় কৃষকদেরকে উচ্চ ফলনশীল বীজ সরবরাহ করে। যেমন- অতীতে কুমিল্লা এলাকায় হেক্টর প্রতি আমন ধান হতো মাত্র ১৪ কুইন্টাল যা পরবর্তীতে ৫৫ কুইন্টালে দাঁড়ায়।

৪. কর্মসংস্থান : গ্রামাঞলে রাস্তাঘাট তৈরি, খাল কাটা, বাঁধ নির্মাণ প্রভৃতি কাজ কুমিল্লা সমবায় করে বলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এছাড়া পল্লি অঞ্চলের মেয়েদেরকেও কারিগরি শিক্ষা দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে তোলে।

৫. সহজে অর্থ ও তহবিল যোগান : কৃষকদের ব্যাংক, বিমা প্রভৃতি থেকে ঋণ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই বাধা হয়ে তারা গ্রামের রক্তচুষা সুদি মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়। কুমিল্লা মডেলে গড়ে ওঠা সমবায় কৃষকদেরকে ঝামেলামুক্ত অর্থাৎ সহজ শর্তে অর্থ ও তহবিল যোগান দিচ্ছে।

৬. প্রশিক্ষণ দান : কুমিল্লা মডেল শুধু কৃষকদের কৃষিঋণ, কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে না; বরং এর ব্যবহার সঠিক ও নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে কৃষকদেরকে কৃষি সম্প্রসারণ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে।

৭. অবকাঠামোগত উন্নয়ন : কুমিল্লা মডেল নুতন নতুন প্রকল্পের আওতায় নতুন নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত এবং খাল খনন করে থাকে। কুমিল্লার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে কুমিল্লা মডেল সম্পৃক্ত।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দেশের পল্লি উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে কুমিল্লা মডেলের ভূমিকা ও কার্যাবলি প্রশংসনীয় । 

গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া ছড়িয়ে দিতে সব এলাকার গ্রামগঞ্জে সমবায় সমিতি গড়ে তুলতে হবে। 

সর্বোপরি কুমিল্লা মডেল জনগোষ্ঠীর অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ