স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর  জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর  ।

স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর
স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর 

স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর 

অথবা, স্বাস্থ্য কি কি বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে? পর্যালোচনা কর ।

উত্তর : ভূমিকা : মানব জীবনে স্বাস্থ্য হলো সকল প্রকার মানসিক শারীরিক সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সকল প্রকার রোগ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা শরীরে কোনো প্রকার অসুখ না হওয়া। 

স্বাস্থ্য মানুষের এক অমূল্য সম্পদ, মানুষ তার অন্যান্য সম্পদ রক্ষার বিভিন্নমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাই তার স্বাস্থ্য সম্পদ রক্ষাও করতে হয় নানা রকম পদক্ষেপের সমন্বয়ে। তাই স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে হলে পরিবেশ সমাজ ও আচরণ সব দিকেই খেয়াল রাখতে হবে।

→ স্বাস্থ্য কি কি বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে : স্বাস্থ্য সকল বিষয়ের উপর প্রভাব বিস্তার করে তার মধ্যে অন্যতমগুলো হলো :

১. সামাজিক প্রভাব : কেবল মাত্রই স্বাস্থ্য বলতে মোটা মানুষকে বোঝায় না। এর সাথে আনুষঙ্গিক আরো নানা রকম বিষয় জড়িত থাকে। 

মূলত স্বাস্থ্য হচ্ছে একটি সামাজিক বিষয় যার মূলে রয়েছে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ এবং সংস্কৃতির অনুকরণ ও অনুসরণ। সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি প্রথা প্রতিষ্ঠান নিয়ম- কানুন সংগঠন প্রভৃতির সমন্বয়ে সামাজিক পরিবেশ গঠিত হয়। 

যে বিশেষ সমাজব্যবস্থার মধ্যে মানুষ বসবাস করে তার সমষ্টিই হলো সামাজিক পরিবেশ সমাজের বিভিন্ন মানুষদের কারণে ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্যগত তারতম্য ঘটে। 

এ ক্ষেত্রে Rene Dubos এর মন্ত ব্য উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এ শতাব্দীর শুরুতে আফ্রিকা মহাদেশে এক ধরনের চর্মরোগকে একেবারে স্বাভাবিক বলে মনে হত, তাহলে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্য হচ্ছে একটি আপেক্ষিক ব্যাপার মাঝে মাঝে প্রতিবেশীদের দেখাদেখি একটি রোগী কিংবা স্বাস্থ্য বলে চিহ্নিত করা হয়।

তবে স্বাস্থ্যের সাথে যেকোনো সমাজের একটি আধুনিক প্রযুক্তির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নতি হতে পারে। 

প্রযুক্তিনির্ভর সমাজের স্বাস্থ্য এবং প্রযুক্তিহীন সমাজের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ধনি ও দরিদ্রের একটা ব্যাপক মিল দেখা যায়। গরিব সমাজের মানুষেরা প্রায়ই অনাহার বা অর্ধাহারে দিন অতিবাহিত করে। 

খাবারের পুষ্টিগুণ তেমন নয় সে সকল খাবার তারা খায় তা সুষম খাদ্য কিনা তারা তা জানে না। ফলে সুষম খাদ্য খায় না। তাদের থাকার জায়গা স্বাস্থ্য সমান নয়। আবার সেখানে তাকে সেটা নিম্নমানের ঘর ।

কেউ খোলা আকাশের নিচে থাকে । ফলে বিভিন্ন রোগের শিকার হয়। একটি দেশ যত শিল্পোন্নত হবে এবং দেশের জনগণ ততই স্বাস্থ্য সচেতন হবে এবং এটা জনগণের জন্য আশীর্বাদ কিনা হুমকি উভয়ই হতে পারে।

স্বাস্থ্যের সাথে আবার সামাজিক বৈষম্যের একটা বিশাল সম্পর্ক রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সমাজ তাদের দেশের সম্পদ সুষমভাবে পায় না। 

সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে রয়েছে নানা রকম অনিয়ম কিন্তু সম্পদের উপরই নির্ভর করে একজন মানুষের স্বাস্থ্য, সামাজিক ও মানসিক কল্যাণ ।

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যারা উন্নত সমাজের মূল্যায়ন করা হয় বেশি। পক্ষান্তরে যারা অনুন্নত সমাজের + তাদেরকে সমাজের নীচু বলে মনে করা হয় । সুতরাং স্বাস্থ্যের একটি সামাজিক প্রভাব রয়েছে।

২. স্বাস্থ্যের পরিবেশগত প্রভাব : সুস্বাস্থ্যের জন্য দরকার উপযোগী ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। 

সার্বিকভাবে আমাদের বাসভূমিই আমাদের ডগলাস ও হল্যান্ডের মতে সেসব বাহ্যিক শক্তি ও অবস্থা মানবজীবনকে অর্থাৎ মানুষের স্বভাব আচরণ ও বিকাশ ব্যবস্থায় এবং দেহ যন্ত্রের বর্ধন ও বিকাশজাত পরিপক্কতার প্রভাব বিস্তার করে তার সমষ্টিকে পরিবেশ বলে। 

সুস্বাস্থ্যের জন্য যে কয়টি মৌলিক অধিকার দরকার এর মধ্যে পরিবেশ অন্যতম। নির্মল বাতাস, নিরাপদ পানি, বিষমুক্ত জমি এবং স্বাস্থ্যকর বাসস্থান যা তাকে ক্ষতিকর উপাদান থেকে সুরক্ষা দিবে। 

পূর্বে Filth disese বা অনাকাঙ্ক্ষিত রোগ নামক একটি পরিভাষা প্রচলন ছিল। এর দ্বারা তৎকালীন পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতাকে বুঝানো হতো।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে বিশুদ্ধ পানি পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত গৃহায়ন ব্যবস্থার কারণে বিশ্বে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় কিন্তু অনিয়মিত শিল্পায়নের ফলে পরিবেশ দূষণ লক্ষণীয়। 

এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য উন্নয়নে EU তে যেসব সনদের কথা বলা হয়েছে তাহলো বাঁচার জন্য খাদ্য, পানি দূষণ থেকে মুক্তি, অত্যাচার ও বৈষম্য থেকে পরিত্যাগ উল্লেখ্যযোগ্য। অন্যদিকে অনুন্নত দেশসমূহ এসব থেকে বঞ্চিত। তাই সে দেশের জনগণ নানা রকম অসুখের শিকার হয় । 

যেমন অনেক রোগ আছে যেগুলো বাতাসের মাধ্যমে ছড়াই যেমন— যক্ষ্মা, বসন্ত, কলেরা, চোখ উঠা প্রভৃতি রোগ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি অর্থাৎ পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

৩. আচরণগত প্রভাব : স্বাস্থ্য আচরণের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। সুস্বাস্থ্যের জন্য যেসব আচরণ রয়েছে সেগুলো রয়েছে মূলত সামাজিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত। 

ব্যক্তি বেড়ে উঠার সাথে সাথে এসব মূল্যবোধ আয়ত্ত করতে থাকে, শিশু ও কিশোর বয়সের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও এ ধরনের আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে । 

তবে এসব উপাদানের প্রভাব শিশুদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে তারা ভালো অথবা খারাপ স্বাস্থ্য নিয়ে বেড়ে ওঠে। এটা শিশুকে যদি ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ করতে শেখায় তবে তা তার সুস্বাস্থ্য বয়ে আনবে।

মানুষের আচরণের উপর প্রভাব বিস্তারকারী অন্যতম উপাদান হলো স্বাস্থ্য। এমন কিছু শারীরিক অসুস্থতা আছে যা জীবনব্যাপী প্রভাব বিস্তার করে থাকে। 

কোনো লোক যদি দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে থাকে তবে পরিবারের অন্য লোকেরা বিরক্ত বোধ করে। অসুস্থ ব্যক্তি সমাজে কাজ করতে পারে না। 

অপরদিকে সুস্থ ব্যক্তি কর্মক্ষমতা ধরে রাখতে পারে এবং সমাজে কর্মক্ষম ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে এবং অসুস্থ ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা কমে। সবাই তাকে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে। 

স্বাস্থ্যহীন ব্যক্তি ক্রমশ নিজের উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, সব কাজ কর্ম ছেড়ে দিয়ে রসে বসে মৃত্যুর প্রহর গুণে। 

নিজের মাঝে হতাশা, দুর্দশা একাকিত্ব কাজ করে যার তার স্বাস্থ্যের উপর এবং আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে আমরা লক্ষ করে থাকি অসুস্থ ব্যক্তি সবসময়ই ঘৃণার পাত্র হন। 

এসকল আচরণ ব্যক্তির মাঝে আরো ঘৃণা বয়ে আনে এবং এ সকল বিষয় তার আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে, দেখা যায় এসব কারণে তার আচরণ খিটখিটে হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি ব্যক্তি সমাজ, পরিবেশ আচরণ এবং সকল ক্ষেত্রেই খুবই গুরুত্ব বহন করে । 

সুস্থ মানুষের আচার-আচরণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে কিন্তু অসুস্থ বা স্বাস্থ্যহীন মানুষের ভারসাম্যহীন আচরণ, পরিবার, সমাজ ও পরিবেশে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় যা পরিবার সমাজ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর 

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা কর  । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ