সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি।

সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি
সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি

সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি

উত্তর ভূমিকা : প্রশাসন পরিচালনায় সংগঠন একটি অপরিহার্য অঙ্গ। সুষ্ঠুভাবে সমাজের প্রতিটি কার্যসম্পাদন করতে গঠনের বিকল্প নেই । 

তেমনি লোকপ্রশাসনের আলোচনায়ও সংগঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতায়। সংগঠনের মাধ্যমেই যথার্থ মানব কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব। 

মূলত একটি দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাকে গতিশীল ও কার্যকর রাখতে সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। একমাত্র সংগঠনের মাধ্যমে মানবসমাজের সব উদ্দেশ্য সাধন সম্ভব হয়।

সংগঠন : সাধারণত কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যার্জনের জন্য যখন অধিকাংশ জনগণ সমষ্টিগত ও সহযোগিতাপূর্ণ কর্ম সম্পাদন করে থাকে তখন ঐসব জনগণ কর্ম সম্পাদনের জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাই সংগঠন। 

ডিমক এর মতে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখার হাতিয়ার হলো সংগঠন। অর্থাৎ সংগঠন হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে অধিকসংখ্যক জনগণ কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যার্জনের জন্য কর্মসম্পাদন করে থাকে ।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা :

লখার গুলিক (Luther gullick) এর মতে, "Organisation is the formal structure of authority through which work subdivision are arranged, defined and co-ordinated for the defined objectives. " 

অর্থাৎ, সংগঠন হচ্ছে কর্তৃত্বের আইনগত কাঠামো যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কর্মের লক্ষ্য অর্জনের জন্য উপবিভক্তি, বিন্যাসিতকরণ ও সমন্বিতকরণ করা হয় ।

এল. ডি. হোয়াইট (L.. D. White) এর মতে, "Organisation is an agreement of personal for facilitating the accomplishment of some agreed purpose through allocation of functions and responsibilities." অর্থাৎ, কোনো স্বীকৃত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুবিন্যস্ত বণ্টনকেই সংগঠন বলা হয়।

ই. এন. গ্লাডেন (E. N. Gladen) এর মতে, “কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কর্ম সম্পাদনের জন্য যে কার্যকরী সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে তাই সংগঠন ।"

জন ডি. মুনি (John D. Mooney) এর মতে, "Organisation is the form of every human association for the attainment of common purpose." অর্থাৎ, সংগঠন হচ্ছে মানবসমাজের এমন সংঘ যা অভিন্ন উদ্দেশ্য অর্জনে গড়ে ওঠে।

জে. এম. ফিফনার (J. M. Pfiffner) এর মতে, "Organisation consists of the relation of individuals to individuals and groups which are corelated as bring about an ordinary division of labour." ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির এবং গোষ্ঠীর সম্পর্কের ভিত্তিতেই সংগঠন সৃষ্টি যা শ্রমবিভাজনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত।

© সংগঠনের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য : সংগঠনের প্রক্রিয়ায় Chain of Command বিদ্যমান রয়েছে, যা সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিম্নে সংগঠনের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হলো :

১. সংগঠন পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি : সংগঠনের অন্যতম প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য হলো তা পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি। সুপরিকল্পিতভাবে সংগঠন গড়ে ওঠার কারণ হলো কতিপয় দল বা গোষ্ঠীর কতিপয় অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন। 

মানবসমাজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধন এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সুপরিকল্পিতভাবে সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে।

২. সংগঠন : আইনগত কাঠামোর ওপর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন হলো মানবসমাজের সেই ব্যবস্থা যা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধনে আইনগত কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। 

কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে সংগঠন পরিচালিত হয়। কেননা সংগঠনে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সমন্বয়সাধনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

৩. ব্যক্তি ও দলের সমন্বয় : সংগঠন হলো ব্যক্তি ও দলের সমন্বয়ে গঠিত একটি ব্যবস্থা। কতিপয় ব্যক্তি এবং দল হচ্ছে সংগঠনের অন্যতম উপাদান। 

কেননা সংগঠন কেবল কতিপয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গঠিত হয়। তবে উদ্দেশ্য সাধনে উক্ত ব্যক্তি বা দলের মধ্যে অবশ্যই চেইন অব কমান্ড থাকে ।

৪. সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য : প্রতিটি মানব সংগঠনই সুনির্দিষ্ট কতিপয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে গড়ে ওঠে । সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন ছাড়া জনগণের সমষ্টিগত ও সহযোগিতামূলক কর্মপ্রচেষ্টা ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যার্জনের উদ্দেশ্যেই সুপরিকল্পিতভাবে সংগঠন গড়ে তোলা হয় ।

৫. আদর্শ ও মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত : প্রতিটি মানব সংগঠনই আদর্শ ও মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত । কেননা সমাজের মানুষের অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধন কেবলমাত্র আদর্শ ও মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত। তাই আদর্শ ও মূল্যবোধ ছাড়া সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা এবং লক্ষ্যার্জন সম্ভব হবে না ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সংগঠন হলো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পর্কযুক্ত সেই সংঘ যা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের সাথে সম্পৃক্ত। 

সংগঠন ছাড়া মানবসমাজের সাধারণ উদ্দেশ্য সাধন করা সম্ভব নয়। সংগঠনের মধ্য দিয়েই কেবলমাত্র মানব কল্যাণ নিশ্চিতকরণ সম্ভব হয়। আধুনিক জনকল্যাণ রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সংগঠন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা একান্ত কাম্য ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সংগঠন কাকে বলে। সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ