৮টি অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম

বিশ্বের জনসংখ্যা আজ সাতশ কোটিরও বেশী। এই বিশাল জনসংখ্যার মাঝে একজন মানুষের চাকরি পাওয়াটা খুবই দুঃসাধ্য একটি ব্যাপার। 

কেননা এই পৃথিবীতে দুর্বলরা টিকে থাকতে পারে না। আজকের প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় কেবলমাত্র তারাই টিকে থাকবে এবং থাকতে পারবে, যারা জ্ঞানে গুণে অর্থ সম্পদ এবং পেশীশক্তিতে বলবান। 

অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম
অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম

আর যাদের এইসব রয়েছে তারা কখনোই ঘরে বসে ইনকাম করার চিন্তা করে না। ঘরে বসে তারাই ইনকাম করার চিন্তা করে যারা কোনো না কোনো কারণে বর্তমান বিশ্বের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। এই কুলিয়ে উঠতে না পারাটা দুই ধরনের। 

এক)  জ্ঞানে গুণে অর্থ সম্পদ এবং পেশীশক্তি না থাকার কারণে,  সমাজে সবার সাথে নিজেকে মানাতে পারছে না। 

দুই) আরেকটি শ্রেণী হচ্ছে যাদের জ্ঞান ,গুণ ,অর্থ, সম্পদ , পেশীশক্তি সবই আছে। কিন্তু বর্তমান দুনিয়ার বাজার পরিস্থিতিতে একক আয়ে আর সংসার চলে না। তাদের বাড়তি কিছু আয়ের জন্য প্রয়োজন বাড়তি চাকরি। যা একমাত্র ঘরে বসেই করা সম্ভব।  

উপরোক্ত কারণ ছাড়াও অনেক ছাত্রছাত্রীই আছেন যারা পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেদের হাত খরচের জন্য এক্সট্রা ইনকামের চিন্তা করেন। আর তাই আমরা যারা এই পরিস্থিতিতে আছি, তাদের জন্য আজকের আয়োজন অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম গুলো কী কী। 

আজ আমরা অনলাইনে আয় করার যাবতীয় বৃত্তান্ত জানার চেষ্টা করব। এই আর্টিকেলটি পড়ে যেকেউ অনলাইনে নিজেদের একটি জায়গা করে নিতে পারবেন আশাকরি। 

আজ আমরা ফুলটাইম এবং পার্টটাইম উভয় প্রকারের কাজের কথা আলোচনা করব। একইসাথে দেশী এবং বিদেশেী সকলপ্রকার সাইটের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব।

 যাতে আপনারা বিকাশ কিংবা নগদের মতো সহজলভ্য লেনদেনের মাধ্যমে সহজেই টাকা আয় করতে পারেন।

অনলাইন জব করতে কি কি প্রয়োজন 

শুধু মুখে বললেই অনলাইনে কাজ করা হয়ে যাবে না। এই অনলাইনে কাজ করার জন্যও রয়েছে পূর্ব প্রস্তুতি। আমরা জানি অনলাইনে চাইলে যেকোনো জায়গা থেকে করা যায়। 

তাই অনলাইনে যোগাযোগ রক্ষার জন্য কিছু কিছু ডিভাইস অবশ্যই থাকা জরুরী।  আসুন জেনে নিই অনলাইন কাজ করতে হলে কী কী  জিনিসের প্রয়োজন হতে পারে,  

  • একটি মোবাইল কিংবা ল্যাপটপ 
  • উচ্চগতিসম্পন্ন স্ট্যাবল ইন্টারনেট কানেকশন 
  • কমিনিউকেশন দক্ষতা
  • মোটামুটি ইংরেজি ভাষা জ্ঞান
  • কিছু সফট স্কিল

অনলাইনে কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো এখানে আমাদের,  একাডেমিক দক্ষতা অদক্ষতা কিংবা     রেজাল্ট এখানে কোনো কাজে আসবেনা। 

সার্টিফিকেটের চাইতে আপনার দক্ষতার মূল্য এখানে বেশি। তাই এখানে আপনি যত বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন ততবেশী  অনলাইনে তত বেশি আয় করতে পারবেন। 

তাই ভালো কোনো এক প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইন কাজের জন্য কোর্স করতে পারলে তা হবে যেকোনো কারোর ক্ষেত্রেই প্লাস পয়েন্ট। এবার আসুন আমরা একটি একটি করে অনলাইনে কাজ সম্পর্কে অবগত হই। 

অনলাইন পেইড সার্ভে করে আয় 

আজ আমাদের প্রত্যেকের হাতে হতেই স্মার্টফোন রয়েছে। যা দিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই যুক্ত থাকি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

এইসব সামাজিক মাধ্যম থেকে আমরা কিন্তু কোনো টাকা পয়সা পাই না। অথচ আমরা তাদের সাইটে সময় দেই বলে তারা কিন্তু ঠিকই টাকা পয়সা পেয়ে যাচ্ছে। তাই যে সময়টা আমরা ওখানে ব্যয় করি, সেই একই সময় যদি পেইড সার্ভেতে ব্যয় করি, তাহলে আমাদের একটা আয়ের ব্যবস্থা হবে।

পেইড সার্ভে বিষয়টা কী?

সার্ভে মানে হচ্ছে জরিপ। আর পেইড মানে তো আপনারা জানেনই। যার অর্থ টাকা প্রদান করা। এখন পেইড সার্ভের মানে দাঁড়াচ্ছে, যে জরিপে অংশ নিলে টাকা পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ কেউ যদি অনলাইনে কোনো জরিপে অংশ নিয়ে তাদের সময় দেয়, তাহলে তারা টাকা প্রদান করবে।

অনলাইন যে পেইড সার্ভে গুলো হয়, তা  মূলত বিভিন্ন প্রোডাক্ট অথবা বিভিন্ন প্রকার সার্ভিস সমন্ধে গ্রাহকের মতামতকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। 

এই সার্ভে বা জরিপের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো তাদের সার্ভিস সম্পর্কে তথা তাদের সার্ভিসের ভালো মন্দ দিক গুলো জানতে পারে। আর যারা এই সার্ভেতে অংশ নেয় কিংবা নিবে, তাদেরকে ঐ কোম্পানি গুলো টাকা দেয়। 

আর এভাবেই কোনো কষ্ট করা ছাড়া, শুধুমাত্র সময় দেওয়ার মাধ্যমে অনলাইনে আয় করা যায়। যেখানে কোনো প্রকার অভিজ্ঞতা ছাড়া টাকা ইনকম করা যায়।

কন্টেন্ট রাইটারের কাজ

যারা শখের বসে টুকটাক লেখালেখি করেন। কিংবা যারা ফেইসবুকে চমৎকার চমৎকার পোস্ট দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের আইকন হিসাবে গড়ে তুলেছেন। তাদের জন্য কন্টেন্ট রাইটিং বিষয়টি একেবারেই সহজ। 

তারপরও এই বিষয়ে কাজ করতে হলে বিশেষ কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। যাদের সামান্য পড়াশোনা আছে, তারাও চাইলে কন্টেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করতে পারেন। তবে যারা ইংরেজিতে ভালো তাদের জন্য এই সেক্টরে প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

যারা ইংরেজিতে দুর্বল তারা দেশীয় বিভিন্ন সাইটে তাদের নির্ধারিত বিষয়ে লিখে টাকা আয় করতে পারেন। 

আর এই কন্টেন্ট রাইটিংয়ের টাকা সাইট গুলো সাথে সাথেই নগদ বিকাশ এই জাতীয় মাধ্যমে সরাসরি পরিশোধ করে। তাই যেকেউ চাইলে কন্টেন্ট রাইটিং করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারেন।

কন্টেন্ট রাইটিং কাজ আপনি কোথায় পাবেন? কন্টেন্ট রাইটিং মূলত ওয়েবসাইট ভিত্তিক কাজ। আমরা যারা যেকোনো বিষয়ে সার্চ দেওয়ার জন্য গুগলে প্রবেশ করি। 

তখন আমাদের যা দরকার তা লিখে সার্চ দেই। আর সার্চ দিলে প্রথম দিকের সাইট গুলোতেই আমরা সাধারণত ঢুকে তা দেখার চেষ্টা করি।

এভাবে বিভিন্ন ওয়েসাইট তাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পোস্ট পাবলিশ করে। তারা সাধারণত গুগল ব্যবহারকারীরা যা বেশী দেখতে চায়, সেই সব আর্টিকেলই পাবলিশ করে। 

আর এইসব আর্টিকেলই তারা বিভিন্নজনকে লেখার জন্য নিয়োগ করে। আর তাদের নির্দেশনা মেনে এইসব আর্টিকেল লিখতে পারলেই আপনি টাকা পাবেন। যা আপনার জন্য পার্টটাইম কিংবা ফুলটাইমের একটি কাজ হতে পারে। 

ব্লগিং করে আয়

যারা মোটামুটি লেখালেখির সাথে জড়িত তারা তো জানেনই ব্লগিং কী জিনিস। আর যারা জানেন না তাদেরকে বলি, ব্লগিং হলো গুগলের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লেখালেখি করা। যা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। আমরা প্রথমে বলেছিলাম অন্যের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে লিখে আয় করার কথা। 

এখন বলছি নিজেই একটি ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগ তৈরী করে, সেখানে মানসম্মত লেখা পাবলিশ করে (যা মানুষেরা গুগলে বেশী বেশী সার্চ করে) টাকা আয় করা। 

অনেকেই হয়তো নিজের এক‌টি ব্লগের কথা শুনে ঘাবড়ে যেতে পারেন। অর্থাৎ আপনি কীভাবে ব্লগ তৈরী করবেন! কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী ঘাবড়ানোর কিছুই নেই। 

একদম বিনা পয়সায় বা কোনো প্রকার ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই আপনি অনলাইনে আয় করতে পারবেন শুধুমাত্র ব্লগিং এর মাধ্যমে। 

গুগলে জনপ্রিয় কিছু ওয়েবসাইট বিল্ডার প্লাটফর্ম রয়েছে। যাদের মাধ্যমে আপনি বিনামূল্য ব্লগ তৈরি করে ইনকাম করার রাস্তা পেয়ে যাবেন। এই জাতীয় প্লাটফর্ম গুলো হলো যেমন: ব্লগার কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস। 

এইসব প্লাটফর্ম থেকে যে কেউ টাকা পয়সা ছাড়াই ব্লগ তৈরী করতে পারবেন। আর ব্লগ তৈরি করার পর সেখানে প্রয়োজনী লেখালেখি পাবলিশ করে আপনার ইনকাম শুরু করতে পারেন। 

যদি শুরুতেই আপনার ইনকাম সৃষ্টি হবেনা। টাকা আয়ের জন্য আগে গুগল মনিটাইজেশন করে নিতে হবে। তারপরই টাকা আয় শুরু হবে। আসুন ব্লগিং নিয়ে আমরা একটু বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি। 

ব্লগিং কি - What is Blog

আমরা আগেই বলেছি অনলাইন থেকে টাকা আয় করার খুবই জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে  ব্লগিং। যা বর্তমানে সময়ে খুবই জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। 

ইন্টারনেটের সাহায্যে অনলাইনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের মত প্রকাশ কিংবা বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রদান  করা সহ দৈনন্দিন জীবনযাপনের বিভিন্ন  দিক নিয়ে আলোচনা সমালোচনা ইত্যাদি করার অন্যতম জনপ্রিয় একটি জায়গা হচ্ছে হলো ব্লগিং (Blogging)। বর্তমানে ব্লগিং করার মাধ্যমে যথেষ্ট টাকা উপার্জন করা যায় বলে এর চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলেছে।

সাধারনত, যিনি বা যারা ব্লগে পোস্ট করেন তাকে বলা হয় ব্লগার। এই ব্লগারদের কাজ হলো প্রতিনিয়ত তাদের ব্লগ সাইটে বিভিন্ন কনটেন্ট যুক্ত করা। 

যাতে এই ব্লগ ব্যবহারকারীরা সেখান থেকে তাদের দরকারী সব তথ্য নিতে পারেন। একইসাথে  ব্লগে ব্যবহারকারীরা তাদের মন্তব্য বা অভিবাক্তি বা মতামতও প্রকাশ করতে পারেন। 

এছাড়াও বর্তমান সময়ে ব্লগিং যেন , ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতার একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। শুধু তাইনয় সাম্প্রতিক বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগাররা বিভিন্ন ব্লগে  নিয়মিত আপডেট করে থাকেন। 

আমরা যারা ব্লগিং শুরু করে সেখান থেকে ইনকাম করতে চায়, তাদেরকে বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করে তবেই আয় পারব।

প্রথমত, হচ্ছে ডোমেইন। একটি  ব্লগের জন্য সঠিক ডোমেইন নাম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যেকোনো ব্লগ সাইট তৈরি করার পর পরই শুরুর কাজটি হলো, একটি ব্রান্ড-এবল, উচ্চারনে সহজ ও শ্রবণ‌যোগ্য ও  শ্রুতিমধুর একইসাথে  সবার সহজে মনে থাকবে, এমন একটি ডোমেইন পারফেক্ট নাম নির্বাচন করা। 

দ্বিতীয়ত হচ্ছে হোস্টিং। যেকোনো  ব্লগ সাইটের জন্য একটি ভালো মানের হোস্টিং সার্ভিস নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরী। ডোমেইন নাম নির্বাচনের মত একটি ভালো মানের হোস্টিং সার্ভিস ক্রয় করাও ব্লগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তৃতীয়ত হচ্ছে ব্লগের চমৎকার ডিজাইন। যা যেকোনো ভিজিটরকে আকৃষ্ট করবে। ভালো একজন ওয়েব ডিজাইনের দিয়ে ব্লগটি সুন্দরভাবে ডিজাইন করতে হবে। 

ডোমেইন ও হোস্টিং নেওয়া গেলে তবেই ব্লগ ডিজাইন করতে হবে। ডিজাইন করার ক্ষেত্রে, প্রথমে ইন্সটল করে নিতে হবে হোস্টিং Cpannel এ ওয়ার্ডপ্রেস। 

তারপর একটি চমৎকার থিম ইনস্টল করতে হবে। এরপর যাবতীয় দরকারী কাস্টমাইজ করে পছন্দমতো ডিজাইন করতে হবে। 

কীভাবে  থিম গুলো কাস্টমাইজ করা যায়, সে বিষয়ে অনলানেই প্রচুর পরিমাণ  ফ্রি  ভিডিও পাওয়া যাবে। ঐসব ভিডিও দেখে আপনি নিজেই ব্লগটি ডিজাইন করতে পারবেন।

চতুর্থ যে কাজটি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণতা হলো, ব্লগে কন্টেন্ট লেখা, পাবলিশিং এবং মার্কেটিং করা।  যা ব্লগিং এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

যেকোনো ব্লগের ডিজাইন করার পর,  কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয় যা গুগলে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে তার উপর কন্টেন্ট লেখা শুরু হবে। একইসাথে তা ঐ ব্লগে নিয়মিত একটা নির্দিষ্ট সময়ে পাবলিশ করতে হবে। 

যেকোনো কন্টেন্ট লেখার ক্ষেত্রে তথ্যবহুল লেখাই সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য পায়।  ব্লগে কন্টেন্ট পাবলিশ করার পর পরই সেই কন্টেন্ট গুলো বিভিন্ন সোসাল মিডিয়াতে শেয়ার করে বিভিন্ন ভিজিটর ব্লগে নিয়ে আসবে।

সর্বশেষে এই  ৪ টি ধাপ সম্পূর্ণ  করার পর আপনার ব্লগে অধিক সংখ্যাক ভিজিটর বা পাঠক আসতে শুরু করবে। 

যখনই আশানুরূপ ফল আসতে শুরু করবে তখন  গুগল ও অন্যান্য কোম্পানি থেকে অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে।  

আর এভাবেই সেই ব্লগ সাইটের সাথে কানেক্ট করে সেখান থেকে নিদির্ষ্ট পরিমাণ রেভিনিউ প্রতি মাসে আয় করে যাবে।  

তাছাড়া আপনার ব্লগটি জনপ্রিয় হয়ে গেলে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের বিজ্ঞাপনের জন্য আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। সেখান থেকেও আপনি বেশ ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অতএব,  ব্লগিং এর ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে সময় ও শ্রম দিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। এই সেক্টরে  লেগে থাকলে অনলাইন থেকে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষার ব্লগিং এ দ্রুত আয় করা সম্ভব। 

ইউটিউবিং করে আয়

বর্তমান আধুনিক ডিজিটাল যুগে ইউটিউবের সাথে পরিচয় নেই, এমন লোক পাওয়া যাবে না। আমরা শিক্ষিত-অশিক্ষিত, যুবক-বৃদ্ধ ছাত্র-শিক্ষক  মা-বোনেরাসহ এমন কেউ নেই যারা ইউটিউব ব্যবহার করে না। ইন্টারনেটে আমাদের অধিকাংশ সময়ই ব্যয় করি ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে।

কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এই ইউটিউব থেকেও চাইলে আয় করা যায়। ইউটিউবে আমরা যাদের ভিডিও দেখি, তারাও আমাদের দেখার কারণে ইউটিউব থেকে টাকা পায়। 

যারা ইউটিউবিং তথা ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও তৈরি, তারা ইউটিউব থেকে বিজ্ঞাপনের কারণে একটা অনির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সেখান পায়। আর এভাবেই আপনিও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

বর্তমান যুগে ইউটিউবিং একটি ভালো উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে দাঁড়িয়েছে। আর ইউটিউবিং এত দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার কারণ হচ্ছে, এখানে শুধু একটি নয় বরং অসংখ্য উপায়ে আয় করা যায়।  তার কিছু উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, 

  • গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম
  • স্পন্সরশিপের মাধ্যমে আয় 
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
  • গেম খেলার পার্টটাইম জব

এই যুগে মোবাইলে গেইম খেলে না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আমাদের ছোট বড় সবাই মোবাইলে গেইম খেলতে অভ্যস্ত। অথচ আমরা গেইম খেললেও সেখান থেকে টাকা আসে না। বরং টাকা দিয়েই গেইম খেলতে হয়।

কিন্তু এই গেইম খেলেও যে উল্টো টাকা আয় করা যায় সেটা আমরা অনেকেই জানি না। হ্যাঁ, আপনি ঠিক শুনেছেন। 

এই কাজগুলো মূলত নতুন নতুন গেইম যারা লঞ্চ করে, তারা দিয়ে থাকে। বর্তমানে অসংখ্য কোম্পানি রয়েছে যারা নতুন নতুন গেইম বাজারে ছাড়ে। এইসব কোম্পানি গুলো  তাদের গেমকে শুধু পরীক্ষা করার জন্য অন্যান্য ব্যবহারকারীদের টাকা দিয়ে থাকে। আর যেকেউ চাইলে এই সুযোগকে কাজ লাগিয়ে সহজেই গেইম খেলে অনলাইনে পার্টটাইম ইনকাম করতে পারেন।

ক্যাপচা সলভের অনলাইন পার্টটাইম জব  

আমরা অনেকেই ক্যাপচা সলভের সাথে পরিচিত। আমরা অনেক সময় গুগলে কাজ করতে গেলে নিজেদের রোবট নই বলে ক্যাপচা সলভ করে মানুষের প্রমাণ দিতে হয়। 

তাই ক্যাপচা শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। অনলাইনে যেকোনো  অ্যাকাউন্ট খোলার সময় অথবা কোনো কিছুতে এক্সেস পাওয়ার জন্য আমাদের এক বা একাধিক  ক্যাপচা পূরণের কাজের সম্মুখীন হতে হয়। আর এই ক্যাপচা এবং যে ক্যাপচা করে আপনি ইনকাম করেছেন তা একদম একই। 

পার্থক্য বলতে এতটুকু যে,  আপনি এই ক্যাপচা পূরণের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। আর বর্তমানে পার্টটাইম কাজ হিসাবে ক্যাপচা সলভিং সবার শীর্ষে রয়েছে। এখন আমরা কয়েকটি  জনপ্রিয় ক্যাপচা সলভিং এর ওয়েবসাইটের নাম জানব।  

  • প্রোটাইপার্স ( PRO-TYPERS) 
  • টুক্যাপচা ( 2CAPTCHA) 
  • মেগাটাইপার্স ( MEGATYPERS) 
  • কলোটিবাবলো ( KOLOTIBABLO)
  • অনলাইন টাইপিং জব

টাইপিং একটি খুবই জনপ্রিয় অনলাইন কাজ। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অসংখ্য যুবক অনলাইন টাইপিংয়ের কাজ করে ভালো পরিমানে টাকা আয় করছেন। 

অনলাইন টাইপিংয়ের কাজ হচ্ছে, নির্দিষ্ট কোনো উৎস থেকে কোনো কিছুকে নতুন ও পরিচ্ছন্ন করে টাইপ করা। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অনলাইনে টাইপিং এর কাজ করা যায়। 

যেমন: ডাটা এন্ট্রি, ফর্ম ফিলাপ, ক্যাপচা এন্ট্রি, পিডিএফ থেকে টাইপিং, ছবি থেকে টাইপিং ইত্যাদি। অনলাইনে এই  টাইপিং করার কাজ পার্টটাইম কিংবা ফুল টাইম উভয় ভাবেই করা যায়। 

ডাটা এন্ট্রির কাজ 

যদি কেউ দ্রুততার এবং নির্ভুলভাবে যে  কোনো লেখা টাইপ করতে পারে, তাহলে তার জন্য ডাটা এন্ট্রি কাজটি হবে জুতসই। এই ডাটা এন্টির কাজের মাধ্যমে যে কেউ  ভালো একটি অর্থ আয় করতে সক্ষম হতে পারেন। 

এই অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির কাজটি  মূলত অনেক ধরনের হতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে, ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা। আবার ফ্রিল্যান্সিংও দুইধরনের হতে পারে, পার্টটাইম এবং ফুলটাইম। তাছাড়া যে কেউ বিভিন্ন জব পোর্টাল গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির জন্যও কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

বর্তমানে আমাদের দেশে ডাটা এন্ট্রির তেমন কাজ না থাকলেও প্রতিবেশী দেশ  ইন্ডিয়াসহ আশেপাশের অনেক দেশের মার্কেটপ্লেস গুলোতে যথেষ্ট পার্ট টাইম অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজ রয়েছে। 

আমরা একটু খোঁজ নিলেই Upwork.com, indeed.com, fiverr.com ইত্যাদি সাইটে যথেষ্ট ডাটা এন্ট্রির কাজের ভালো বিজ্ঞাপন পাবো।  এছাড়াও যে কেউ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটেও অনুসন্ধান করলে ডাটা এন্ট্রির কাজ পেয়ে যাবেন। 

দেশে বসে অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজ পেতে হলে, প্রথমত কাজটি ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। তারপর ভালো ভাবে কাজ শেখার পর অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে  অ্যাকাউন্ট করে ফ্রীলান্সিং এর কাজ শুরু করতে হবে। এই কাজে দক্ষতা অর্জন করে কাজে নামলে অনেক বেশি ভালো করা যাবে। 

কপি টাইপিং জব

যারা অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে একেবারেই নতুন, তাদের জন্য কপি টাইপিং এর কাজটা খুবই ভালো হয়। কেননা কাজটা খুবই সহজ।  কপি টাইমিং মানে হচ্ছে, কোনো নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট কিংবা পেপার থেকে সেটাকে হুবহু একইভাবে টাইপ করে নতুন ফাইলে রূপান্তর করা। 

অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে কপি টাইপিং কাজের যথেষ্ট  চাহিদা রয়েছে। অনেকে রয়েছে, যারা  বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য ও পুরনো বই কিংবা  ডকুমেন্টকে ভালোভাবে নতুন করে সংরক্ষণ করার জন্য সেগুলো নতুন করে টাইপ করান। এবং ডিজিটাল বই আকারে প্রকাশ করেন। 

তাই আপনারা যারা দ্রুতগতিতে টাইপিং করতে পারেন, তাদের জন্য কপি টাইপিং কাজটি খুবই ভালো হয়। এই কাজ সহজ হওয়ার কারণে এই কাজে পেমেন্ট কিছুটা কম। একইসাথে প্রতিযোগীতা অনেক বেশি।  

এইজন্য এই কাজে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে পারলে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। বিশেষ করে নানান অনলাইন মার্কেট প্লেস যেমন, Fiverr, Upwork, freelancer, indeed ইত্যাদি সাইট সমূহে কপি টাইপিং এর প্রচুর কাজের অফার রয়েছে। 

ভার্চুয়াল এসিস্টেন্টের কাজ 

বর্তমান ডিজিটাল যুগে এখন যে কেউ চাইলেই ঘরে বসে পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করতে পারে। এই এসিস্টেন্টের কাজ যেকোনো বিজনেস পার্সন, কিংবা যেকোনো ছোট  বড় কোম্পানির হতে পারে। 

এই  এসিস্টেন্টদের কাজ হচ্ছে, কোম্পানির নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় যে কাজ গুলো রয়েছে সেগুলোর দেখাশোনা ও আপডেট রাখা। ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্টদের মূলত অনলাইনের কাজ গুলোই করতে হয়। তাই এই কাজ করার জন্য কাউকে স্বশরীরে  উপস্থিত থাকতে হয় না। 

ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে যে সব কাজ করতে হয়, সে গুলো হচ্ছে,  

  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
  • ব্লগিং
  • অ্যাড ম্যানেজমেন্ট
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • ইমেইল ম্যানেজমেন্ট 

এছাড়া আরও অনেক ধরনের অনলাইনের কাজ রয়েছে, যে গুলো করার জন্য  বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্যবসায়ীরা ব্যক্তিগতভাবে পার্টটাইম বা ফুলটাইম ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করে। upwork.com, Fiverr, Guru.com ইত্যাদি সহ আরও অসংখ্য  অনলাইন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে এই ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজ পাওয়া যায়। এই সাইটগুলোতে খুব সহজেই একাউন্ট খোলা যায়। এ্যাকাউন্ট করেই কাজের সার্চ করলে যে কেউ ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর জব পেয়ে যেতে পারে। 

অনলাইনে টিউশনি করে আয়

আমাদের দেশের অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীই ছাত্রাবস্থায় টিউশনি করে থাকি। কিন্তু অনেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনি করানো  পছন্দ করেন না। তাই অনেকে ভালো ছাত্র হওয়ার পরও হীনমন্যতার কারণে টিউশনি করা হয়ে উঠে না। 

তাদের জন্যই অনলাইন টিউশনি হতে পারে চমৎকার সমাধান এবং আয়ের একটি উৎস। এছাড়াও যারা বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষকতা করেন তারাও বিভিন্ন কারণে সরাসরি টিউশনি করতে পারেন না। তাই তাদের জন্যও এই অনলাইন টিউশনি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম টিউশনি করার জন্য।

আর এই অনলাইন টিউশনি করার জন্য বিভিন্ন এ্যাপ রয়েছে। যে এ্যাপ গুলো ভিডিও কলিং প্লাটফর্মে তৈরি করা। 

এইসব এ্যাপের মধ্যে এগিয়ে আছে জুম, গুগল মিট, স্কাইপে ইত্যাদি। এইসব এ্যাপের সাহায্যে যেকেউ অনলাইনে টিউশনি করতে পারেন। আর এর মাধ্যমে ভালো আয়ও হতে পারে।

এছাড়াও অনলাইনে টিউশনি করার জন্যই অনেক গুলো ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, 

  • টিউটরসিটী (Tutorcity)
  • চেগ (chegg)
  • টিচেরন (Teacheron) 
  • উইজআইকিউ (WizIQ)

উপরোক্ত এইসব ওয়েবসাইট থেকে যে কেউ চাইলেই ভালো একটি অর্থ ইনকাম করতে পারেন।

ফটোগ্রাফি করে আয় 

বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে অধিকাংশ তরুণ তরুণীদের প্যাশন এবং ফ্যাশন হলো  ফটোগ্রাফি। একইসাথে আজ আমাদের সিংহভাগ ফেইসবুক টুইটার ব্যবহারকারীই প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের বিভিন্ন ছবি পোস্ট করতে পছন্দ করে। 

তাছাড়া অনেকেই আছেন ফোটোগ্রাফিটা তাদের কাছে একটি প্যাশন। আর এই প্যাশনই আপনাকে এনে দিতে পারে অর্থ।

হ্যাঁ আপনি ঠিক পড়েছেন। ছবি তুলেও আজকাল অনলাইনে আয় করা যায়। অনলাইনে অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা বিভিন্ন ক্যাটাগরির ছবির সন্ধান করে। 

এই জাতীয় সাইট থেকে অর্ডার নিয়ে অথবা তাদের চাহিদা মতো ছবি সরবরাহ করেও যেকেউ অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে। 

আর এভাবেই ফটোগ্রাফির মাধ্যমে যেকেউ  অনলাইনে পার্টটাইম কিংবা ফুলটাইম জব করে টাকা আয় করতে পারেন। এখানে অনেকের চিন্তার বিষয় হতে পারে যে, আমরা ছবি কোথায় বিক্রি করব? কিংবা আমাদের কাছ থেকে কে ই বা ছবি কিনবে? 

এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে মুক্তি দিতে আমি আপনাদের কিছু ওয়েবসাইটের নাম দিচ্ছি। যেসব ওয়েবসাইটে আপনারা ছবি বিক্রি করতে পারবেন।

  • আইস্টক ফটো (iSTOCK PHOTO) 
  • শাটারস্টক ফটো (Shutterstock Photo) 
  • ফোটোলিয়া ( Fotolia) 

আর্টিকেলের শেষকথাঃ অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম

বন্ধুরা আমরা এতক্ষন জানলাম অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম। আশা করি আপনারা অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে আয় করার মাধ্যম গুলো দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে একটা কথা মনে রাখবেন যেকোনো জিনিসে লেগে থাকলে সফলতা আসবেই তাই লেগে থাকুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ