ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ ।

ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ
ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ

ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ

ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণসমূহ চিহ্নিত কর।

উত্তর : ভূমিকা : স্পেন বিজয়ের পর ৭১৪-৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দামেস্কের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে অধীনস্ত আমিরগণ দ্বারা স্পেন শাসনের ব্যবস্থা করা হয়। 

স্পেনে বহু জাতি গোত্রের অবস্থানের ফলে স্পেনের মুসলমানদের মধ্যে কোনো সখ্যতা, শৃঙ্খলা বা একতাবদ্ধতা বিরাজ করতো না। ফলে স্পেনের রাজনৈতিক ইতিহাসে নেমে আসে দুর্যোগের ঘনঘটা, বারবার পরিবর্তন হয় শাসক। 

এদের মধ্যে দুই একজন যোগ্যতাসম্পন্ন বিধায় তারা ফ্রান্সে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারলেও অধিকাংশ ছিল অযোগ্য ও অক্ষম। তাই স্পেনে মুসলমানদের ভাগ্যে নেমে আসে নির্মম পরিহাস। 

তরুণ খ্রিস্টান রাজা চার্লস মার্টেলের পুত্র পেপিন এর ক্ষমতারোহণ মুসলমানদের জন্য আরো অশনি সঙ্কেত হিসেবে আগমন করে। অতঃপর ধীরে ধীরে মুসলমানরা একসময় ফ্রান্স ত্যাগে বাধ্য হয়।

→ ফ্রান্স হতে মুসলমানদের উৎখাতের কারণ : ফ্রান্স হতে মুসলমানদের উৎখাতের বহুবিধ কারণ আছে। নিম্নে তাদের ফ্রান্স হতে বহিষ্কারের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো-

১. টরসের যুদ্ধে আব্দুর রহমান আল গাফিকি নিহত হন। তারপর স্পেনে অন্য কোনো যোগ্য গভর্নর তার স্থলাভিষিক্ত না হওয়ার দরুন আরব এবং বার্বারদের মধ্যে গোত্রীয় বিদ্বেষ দেখা দেয়, ফলে উভয় সম্প্রদায় হিংস্র হয়ে উঠে।

২. প্রখ্যাত সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ এবং মুসা বিন নুসাইর এর নেতৃত্বে বিজয় যখন অপ্রতিরোধ্য গতিতে চলছিল এবং ফ্রান্স বিজয়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল তখন দামেস্কের খলিফা তাদের পরবর্তী ৩. স্পেন বিজয়ের সাথে সাথে ফ্রান্স বিজয়ও অপরিহার্য ছিল। 

কিন্তু ফ্রান্স অধিকারের প্রয়োজনীয় সামরিক শক্তি, সঙ্গতি সম্পদের অভাব ছিল। মাঝে মাঝে ফ্রান্সের ভূখণ্ডে অভিযান প্রেরিত হলেও উত্তর আফ্রিকা কিংবা দামেস্কে থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য প্রেরণ করা হয়নি। 

উমাইয়া খিলাফতের কেন্দ্রীয় প্রশাসন থেকে এসব অভিযানগুলোকে সমর্থন বা সহযোগিতা করা হয়নি । কেন্দ্রীয় প্রশাসনের দুর্বলতা, তাদের দ্বারা স্পেনে নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নরদের ঘন ঘন পরিবর্তন ফ্রান্স অভিযানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ।

৪. স্পেনে আরব, অনারব, হিমারীয়, মুদারীয়, সিরীয় এবং নব মুসলিমদের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ এবং অনৈক্য, অসন্তোষ স্পেনে বিশৃঙ্খলা ও গৃহযুদ্ধ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 

এ সকল বিদ্রোহ বিশৃঙ্খলা দমন করতে অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করায় মুসলমানগণ দেশ বিজয়ে গভীর মনোযোগ নিবদ্ধ করতে পারেনি 1

৫. মুসলমানগণ ফ্রান্সে শক্তিশালী সেনাঘাটিটি বা দুর্গ স্থাপনে অবহেলা করে। ফ্রান্সের দক্ষিণ পূর্বে নারবোনে অবস্থিত একমাত্র মুসলিম সেনাঘাঁটিটিও তেমন শক্তিশালী ছিল না। 

এটিকে যদি কুফা, বসরা, অথবা ফুসতাতের অনুরূপ শক্তিশালী করে গড়ে তোলা যেত তা হলে সামরিক আধিপত্য স্থাপন সহজ হত ।

৬. স্পেন থেকে ফ্রান্সকে পৃথককারী পিরেনিজের দুর্গম পার্বত্য এলাকা দুই দেশের মধ্যে চলাচলের প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে ছিল। 

বছরের অধিকাংশ সময়ে গিরিপথগুলো বরফে আচ্ছাদিত থাকতো। এজন্য সর্বদা সামরিক বাহিনী নিয়ে অভিযান করা দুরূহ ছিল। সর্বোপরি বার্বার ও সিরীয়দের জন্য মধ্য ফ্রান্সের আবহাওয়া সহনীয় ছিল না।

৭. দক্ষিণ ফ্রান্সে নিয়োজিত জেনারেলদের কর্তব্যে অবহেলা; যেমন— স্পেনের গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণের পরিবর্তে নারবোনের কমান্ডার স্থান পরিত্যাগ করেন।

৮. কর্ডোভা এবং কায়রোওয়ানই একমাত্র জায়গা যেখান থেকে যুদ্ধের সময়ে ফ্রান্সে অবস্থিত সৈন্যগণ অতিরিক্ত সৈন্য ও রসদ পেতে পারতো। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র হতে উহা ছিল বহুদূরে অবস্থিত। ফলে অতিরিক্ত সৈন্য ও রসদ সরবরাহে নিরাশ হয়ে ফ্রান্সের যুদ্ধে মুসলিম সেনাগণ পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। 

শত্রু সৈন্যদের প্রদত্ত সুযোগে মুসলিম সেনাবাহিনী পশ্চাদপসারণের সুযোগ লাভ করে। অন্যথায় অগণিত সৈন্য নৃশংসভাবে নিহত হতো ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সকল অসুবিধা নিজেদের আত্মকলহ, ও বিদ্বেষ এবং শৃঙ্খলাবোধহীনতার কারণে মুসলমানরা বহুবার ফ্রান্সে তাদের অধিকার ত্যাগ করতে বাধ্য হন। 

তারা একামাত্র নারবোনকে অধিকারে রাখতে পারতো কিন্তু তাও প্রথম আব্দুর রহমান এর সময় ফরাসিরা দখল করে নেয়। কিন্তু সেখানে তারা তাদের দীর্ঘস্থায়ী ও অক্ষয় স্মৃতি রেখে আসতে সক্ষম হয়। 

সেখানে মুসলমানদের মুসলিম রীতিনীতি, আইনকানুন, ধর্মকর্ম এবং সংস্কৃতি প্রায় অর্ধ শতাব্দীব্যাপী চৰ্চিত হতো। এগুলো এ অঞ্চলে বসবাসকারীদের মানসিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম ছিল।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ফ্রান্স হতে মুসলমানদের বহিষ্কারের কারণগুলো লিখ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ