প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর।

প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর
প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর

প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর

উত্তর ভূমিকা : সুষ্ঠু প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়, কলাকৌশলের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয় এবং প্রসারিত হয় বিশেষ বিশেষ কর্মক্ষেত্রের। 

একটি জাতিকে সুখী ও সমৃদ্ধিশালী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সুষ্ঠু প্রশাসন ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ। 

আর এ কাজগুলোর জন্য দক্ষ, অভিজ্ঞ ও যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের প্রয়োজন, যারা সামাজিক লক্ষ্যার্জনের পাশে সরকারি প্রশাসন যন্ত্রকে সাহায্য করবে। এক্ষেে প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনেক।

প্রশিক্ষণের সংজ্ঞা : প্রশিক্ষণ হলো কর্মচারীদের দক্ষতা, জ্ঞান, অভ্যাস এ দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটাবার এমন এক বিশেষ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং ভবিষ্যতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের পথ সুগম হয় । 

সংক্ষেপে বলা যায় যে, প্রশিক্ষণ এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন কর্মচারী তার দক্ষতা ও সুপ্ত সম্ভাবনাকে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে পারে । 

প্রামাণ্য সংজ্ঞা :

অধ্যাপক ক্যামব্রি (Prof. Chambri) বলেছেন, “উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ব্যতীত কোনো পেশায় কার্যকরী নৈপুণ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই প্রশিক্ষণকে কর্মীদের নৈপুণ্য বিকাশের মূল চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।”

বীচ (Beach) এর মতে, "প্রশিক্ষণ একটি প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি যার মাধ্যমে ব্যক্তি একটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে। "

প্রশিক্ষণ একজন কর্মীর সুস্থ চিন্তাধারা, নৈপুণ্য, দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান, কর্মকৌশল ও মানসিকতার বিকাশ সাধন করে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই একজন কর্মী নতুন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াতে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন পরিবেশের সঙ্গে সংগতিবিধানে পারঙ্গম হয়।

প্রশিক্ষণের গুরুত্ব : বর্তমানে প্রশাসন ব্যবস্থা যেমন আধুনিক, তেমনি জটিলও বটে; আর এ আধুনিক ও জটিল প্রশাসন ব্যবস্থা সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন দক্ষ ও যোগ্য কর্মী বাহিনী। 

কর্মীদের দক্ষ ও যোগা করার জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। নিম্নে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. দক্ষতা বৃদ্ধি : প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্যই হলো দক্ষতা বৃদ্ধি, সময় এবং সম্পদের অপচয় রোধ করা। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন কর্মীকে প্রশাসনিক কাজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়। 

তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাকে দক্ষ কর্মীতে পরিণত করা হয় । যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়।

২. নতুন কৌশল আয়ত্ত ক্ষেত্রে : নতুন নতুন কৌশল প্রশাসনে প্রতিনিয়ত কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসন একটি চলমান প্রক্রিয়া। কাজের আয়ত্ত করতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

৩. লোকপ্রশাসনের উন্নয়ন : সরকারি সংগঠন ও এর কর্মীবৃন্দ অর্থের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে সংগঠনের উদ্দেশ্য পূরপে তৎপর থাকে। লোকপ্রশাসনের উন্নয়নের প্রধান শর্তই হলো সময়, সম্পদ এবং অর্থের যথাসম্ভব স্বপ্ন বায় ও সর্বোত্তম ব্যবহার । এর জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

৪. জ্ঞানার্জনে সহায়তা : রাষ্ট্র ও সরকারের সমস্যা ও সম্ভাবনা উভয়ই পরিবর্তনশীল। নতুন নতুন কাজের সাথে পরিচিত হ

তে প্রশিক্ষণ গ্রহণের প্রয়োজন হয়। আর এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অধিক জ্ঞানার্জন সম্ভবপর হয়ে ওঠে ।

৫. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংস্পর্শ : বর্তমান বিশ্ব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম নয়। প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে আধুনিকতম বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংস্পর্শে এনে কর্মীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে জ্ঞানলাভে সাহায্য করে। যা প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

৬. পেশাগত প্রয়োজন : একজন নতুন কর্মী কোনো স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। 

এ শিক্ষাই প্রশাসন পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই একজন কর্মীকে তার পেশার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায়।

৭. গণমুখীকরণ : প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মচারীদের জনগণের প্রতি আন্তরিকতা ও মমত্ববোধ উন্মেষ ঘটানো যায়। প্রশিক্ষণ তাদেরকে দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে তোলে। এতে দেশ একজন গণবান্ধব প্রশাসক লাভ করে ।

৮. সামঞ্জস্যতা রক্ষা : প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কর্মচারীদের অবহিত করানো হয় । আর এর মাধ্যমে সে নিজেকে নতুন পরিবেশ ও কর্মীদের সাথে খাপখাওয়াতে তথা সামঞ্জস্য রক্ষা করতে পারে।

৯. মানসিকতার বিকাশ : প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা পেশাগত সামর্থ্য বৃদ্ধি করে, কাজের গুণগত মান বৃদ্ধি করে। সুষ্ঠু প্রশিক্ষণ কর্মচারীদের মানসিক শক্তির যোগান দেয়, সৎ ও নিষ্ঠাবান করে তোলে। 

ফলে সংগঠনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় । সর্বোপরি, এটা দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতার উন্নতি ও বিকাশ সাধন করে থাকে ।

১০. জাতীয় কল্যাণসাধন : প্রশিক্ষণ জাতীয় কল্যাণসাধনে উদ্বুদ্ধ করে। বৃহত্তর জাতীয় লক্ষ্য ও কর্মসূচি ব্যাপক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা কর্মচারীদেরকে জাতীয় বিষয়ে সচেতন এবং কর্মচারীদের দূরদৃষ্টি ও দৃষ্টিভঙ্গির উন্নতি ও প্রসার ঘটাতে পারে। 

এতে কর্মচারীগণ জাতীয় কল্যাণ সম্পর্কে সজাগ হয়। যারা সাধারণত বয়সে তরুণ তারা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে তাদের সামর্থ্যকে জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগাতে পারে।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, লোকপ্রশাসনে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সাংগঠনিক লক্ষ্যার্জনের একটি অন্যতম উপায় হলো প্রশিক্ষণ। 

যেকোনো প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে কর্মচারীগণ তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অধিক সচেতন হয়। 

ফলে প্রশাসনের কাজে গতিশীলতা আসে । প্রশাসনে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মীর পদোন্নতির জন্য বা তাকে অধিক দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম প্রশিক্ষণ কাকে বলে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ