সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর।

সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর
সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর

সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর

উত্তর ভূমিকা : সমন্বয় যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্যই একটি অত্যাবশ্যকীয় গুণ। প্রতিষ্ঠানের সব কার্য সুষ্ঠু ও কার্যকর উপায়ে সম্পাদন করার জন্য ঐ প্রতিষ্ঠানে সমন্বয়সাধন জরুরি। 

মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের সব অংশকে একই নীতিতে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সমন্বয়সাধন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা। 

একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের কিছু নিজস্ব ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। কঠোর পরিশ্রম ও সমন্বয় অর্জন করেই একটি প্রতিষ্ঠান এসব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারে।

সমন্বয় : সমন্বয় বা Co-ordination হলো এমন একটি নীতি বা ব্যবস্থাপনা যার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অংশ এবং কর্মরত সব ব্যক্তিদের মধ্যে একাত্মতা সৃষ্টি করা ও প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্যের দিকে ধাবিত করা হয়। 

অর্থাৎ সমন্বয় বলতে বুঝায় কোনো প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব বৃদ্ধি সামঞ্জস্যভাবে ও সমানভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা তৈরি এবং কেন্দ্রীয় উদ্দেশ্যে সবাইকে উজ্জীবিত করার প্রক্রিয়া।

সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ : সমন্বয়সাধন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। একটি প্রতিষ্ঠান সমন্বয়সাধন করতে পারলে প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাজ করতে পারে। 

যেমন— কর্মীদের মধ্যে ঐক্য সাধন, অর্থের অপচয় রোধ, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, ভারসাম্য রক্ষা, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন, দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসন, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, সামগ্রিক কার্যসম্পাদন ইত্যাদি । নিম্নে একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো :

১. ঐক্য : একটি সুসমন্বিত (Well Co-ordinated) প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ঐক্য। প্রতিষ্ঠানের সব অংশ ও কর্মীদের ভিতর ঐক্য প্রতিষ্ঠা হবে। 

সবাই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করবে এবং নিরলস কাজ করে যাবে। সমন্বয়ের প্রথম কাজই হলো প্রতিষ্ঠানে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা 1 

২. শক্তিশালী ও কর্মক্ষম : একটি প্রতিষ্ঠান যত বেশি সুসমন্বিত সে প্রতিষ্ঠান তত বেশি শক্তিশালী ও কর্মক্ষম। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান তার সব অংশের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে তাই সব অংশ ও কর্মী মিলে প্রতিষ্ঠানের সব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে । 

একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান যেকোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে সক্ষম। তাই বলা যায়, সমন্বয়সাধন একটি প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী ও কর্মক্ষম করে তোলে।

৩. ভারসাম্য : ভারসাম্যতা একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। একটি প্রতিষ্ঠানের সব অংশ ও কর্মী সমান দক্ষ, শিক্ষিত, পারদর্শী ও অভিজ্ঞ হবে না এটাই স্বাভাবিক। 

তবে একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান এসব পার্থক্য ও ত্রুটি দারুণভাবে মোকাবিলা করে। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান এসব ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণের পথে এগিয়ে যায় ।

৪. সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য উদ্দেশ্য : সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান মানেই একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য উদ্দেশ্য । একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান তার সব অংশ ও কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে পারে বিধায় একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে পারে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকার কারণে সহজেই একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান সফলতা অর্জন করতে পারে।

৫. পরিকল্পিত কাজ : সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের সব কাজই পরিকল্পিত হয়। প্রতিষ্ঠানের সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং সবাইকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনা করে সব কাজ করে বলে অনেক আর্থিক অপচয় রোধ করতে পারে।

৬. সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার : সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের সম্পদের পরিমাণ স্পষ্ট থাকে। 

এ নির্দিষ্ট সম্পদের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে কাজ করে ঐ প্রতিষ্ঠান সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে।

৭. সুশৃঙ্খল : একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতহীন। 

ঐ প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি, শৃঙ্খলা যেমন সুষ্ঠু তেমনি কর্মীদের মধ্যে ঐক্য বজায় থাকে বলে কেউ বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে না। তাছাড়া সব কর্মী কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে শ্রদ্ধাশীল থাকে।

৮. মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক : একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে স্বাভাবিক ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে। 

মালিক শ্রেণি শ্রমিকের স্বার্থ বজায় রাখে। এর ফলে শ্রমিকরা মালিকদের প্রতি অনুগত থাকে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য পূরণে সচেষ্ট থাকে ।

৯. দলীয় কাজ : সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো দলীয় কাজ। একটি প্রতিষ্ঠান দলীয় কাজ নির্দিষ্ট করতে না পারলে লক্ষ্য উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারে না। 

তাই দলীয় কাজ নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই তার সব অংশ ও কর্মীদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দেয় । 

তাই একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠান দলীয় কাজের দ্বারা সফলতা অর্জন করে। সফলতাই অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে স্বতন্ত্র করে দেয় ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান । সমন্বয় ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানই সফল হতে পারে না। 

তাই সব প্রতিষ্ঠানের জন্যই সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ । সব প্রতিষ্ঠান সমন্বয়সাধন করতে পারে না এবং সব প্রতিষ্ঠান সফলতাও লাভ করতে পারে না। 

কেবলমাত্র সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানই তাদের প্রধান লক্ষ্য উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারে । তাই সব প্রতিষ্ঠানকে এসব বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হলে আগে সমন্বয় অর্জন করতে হবে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সমন্বয় কি। একটি সুসমন্বিত প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ